পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"లి: विडूडि-ब्रक्रमांक्छौ দিয়ে বাড়ীর পেছনের বন-বাগান চোখে পড়ে। বেশ জ্যোৎস্ন' উঠেচে-কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর জ্যোৎস্না। হাওয়া আসবে বলে জানলা খুলে রেখেচি। কতক্ষণ ঘুম হয়েছিল জানি নে, ঘন্ট-খানেকের বেশি হবে না-হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। মনে হ’তে লাগলো আমার শিয়রের দিকের জানলায় কে দাড়িয়ে! যেন মাথা তুলে সেদিকে চেয়ে দেখলেই তাকে দেখা যাবে! কথাটা মনে হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভীষণ ভয় হ’ল । অথচ কিপের যে ভয় জানিনে। এমন ভয় যে, কিছুতেই শিয়রের জানলার দিকে তাকাতে পারলুম না। চোখে না দেখলেও আমার বেশ মনে হ’ল, জানলার গরাদেতে দুটো হাত রেখে কে দাড়িয়ে আছে—জলস্ত চোখে সে আমার দিকে চেয়ে রয়েচে–আমি ওদিকে চাইলেই দেখতে পাবো। প্রাণপণে চোখ বুজে শুয়ে রইলুম,—কিছুতেই চাইবে না। ঘুমুবার চেষ্টা করলুম,— কিন্তু ঘরের মধ্যে কোথাও কি ইন্ধর পচেছে ? কিলের পচা গন্ধ ? যেন আয়োডিন, লিণ্ট, মলম প্রভৃতি উগ্র গন্ধের সঙ্গে পচা ক্ষতের গন্ধ মেশানো ? এতকাল বাড়ীতে থাকা নেই, যার ওপর বাড়ী-ঘর পরিষ্কার রাখার ভার, সে কিছুই দেখাশোনা করে না বোঝা গেল। • কে যেন আমার মনের ভেতর বলচে, “চেয়ে দেখ, তোমার মাথার শিয়রের জানলার দিকে চেয়ে দেখ না ?” ঘরের চারিধারে কিসের যেন একটা প্রভাব—কোনো অমঙ্গলজনক, হিংস্র, উগ্র, অশান্ত ধরনের ব্যাপারটা,—ঠিক বলে বোঝানো যায় না । আমি যেন ভয়ানক বিপদগ্ৰস্ত। সে এমন বিপদ, যা আমাকে মরণের দোর পর্য্যস্ত পৌছে দিতে পারে—এমন কি সে দোষের চৌকাঠ পার করে অন্ধকার মৃত্যুপুরীর হিমশীতল নীরবতার মধ্যে ডুবিয়ে দিতেও পারে ... •••আমি চাইবো না---কিছুতেই চাইবো না শিয়রের জানলার দিকে। কিন্তু যে প্রভাবই হোক, আমার ঘরের মধ্যে, দেওয়ালের এ পিঠে তার অধিকার নেই। বহুকাল ধরে পূর্বপুরুষেরা বাস্তু শালগ্রামের অর্চনা করেচেন এ ঘরে-এর মধ্যে কারো কিছু খাটবে না। আমার মনই আবার এ কথাগুলি যেন বললে ! অন্ধকার রাত্রে নির্জন ঘরে মন কত কথা কয় ! জানলার ধারে কি যেন একটা শব হ’ল ! অদ্ভুত ধরনের শট। কে যেন জানলার গরাদের ওপর ঠোকা দিয়ে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইচে!” একবার-দুবার, তিনবার-ভয়ে আমার বুকের মধ্যে টিপচিপ করতে লাগলো--"কাউকে ডাকবো চীৎকার করে ?---একবার চেয়ে দেখবো জানলার দিকে জিনিসটা কি ? হঠাৎ আমার মনে পড়লো একটা ধাড়ি বেঁজী অনেকদিন থেকে বাইরের দেওয়ালে, কড়িকাঠের খোলে বাসা বেঁধে আছে "আজ বিকেলেও সেটাকে একবার দেখেচি। জানলার ওপরকার কাঠে সেটা পোকামাকড় বা জোনাকি ধরছে"-এ তারই শবদ । কথাটা মনে হ’তেই মনের মধ্যে সাহস আবার ফিরে এলো ।•••উঃ, ঘাম দিয়ে জর ছেড়ে গেল ধেন - শরীর অস্বস্থ থাকলে কত সামান্ত কারণ থেকে ভয় পায় মানুষ ! পাশ ফিরে