পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/২৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে २४e পরদিন স্বশীল গড়ের মাঠে নির্দিষ্ট জায়গাটিতে গিয়ে একা বসে রইল। বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেল—তবুও লোকটির দেখা নেই। অন্ধকার নামল। আসবে না সে লোক ? হয়ত নয়। কি একটা বলবে ভেবেছিল কাল, রাতারাতি তার মন ঘুরে গেছে । রাত আটটার সময় স্বশীল উঠতে যাবে, এমন সময় পেছনে পায়ের শব্দ শুনে সে চেয়ে দেখলে । পরক্ষণেই তার মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল। লোকটা ঠিক তার পেছনেই দাড়িয়ে। —সেলাম, বাবুজি । মাপ করবেন, বড় দেরি হয়ে গেল। এই দেখুন— লোকটার পায়ের ওপর দিয়ে ভারী একটা জিনিস চলে গিয়েছে যেন । সাদা কাপড়ের ব্যাণ্ডেজ বাধা—কিন্তু ব্যাণ্ডেজ রক্তে ভিজে উঠেছে। স্বশীল বললে—এঃ, কী হয়েছে পায়ে ? —এই জন্তেই দেরি হয়ে গেল বাবুজি । বাড়ী থেকে বেরিয়েছি, আর একটা ভারি হাতেঠেলা গাড়ী পায়ের ওপর এসে পড়ল। দু-জন লোক ঠেলছিল, তাদের সঙ্গে মারামারি হয়ে গেল আমার সঙ্গের লোকদের । —বসো বসে। তোমার পায়ে দেখছি সাভঘাতিক লেগেছে । না এলেই পারতে । —ন এলে আপনি তো হারিয়ে যেতেন। আপনাকে আর পেতাম কোথায় ? রিকশা করে এসেছি বাবুজি, দাড়াতে পারছি নে! লোকটা ঘাসের ওপর বসে পড়ল। বললে—আজ অন্ধকার হয়ে গিয়েছে বাবুজি, আজ কোন কাজ হবে না। লোকটা কথা বলবে, স্বশীল শুনবে। এতে দিনের আলোর কী দরকার, স্বশীল বুঝতে পারলে না। বললে—কী কথা বলবে বলেছিলে-বলে ধাও না ? লোকটা ধীরে ধীরে চাপা গলায় অনেক কথা বললে—মোটামুটি তার বক্তব্য এই – তার বাড়ী আগে ছিল পশ্চিমে । কিন্তু অনেকদিন থেকে সে বাঙলা দেশে আছে এবং বাঙালী খালাসীদের সঙ্গে কাজ করে বাঙলা শিখেছে। লোকটা মুসলমান, ওর নাম জামাতুল্লা । একবার কয়েকজন তেলেগু লস্করের সঙ্গে সে একটা জাহাজে কাজ করে—ডাচ ইস্ট ইণ্ডিজের বিভিন্ন দ্বীপে নারকোল-কুচি বোঝাই দিয়ে নিয়ে যেত মাদ্রাজ থেকে। সেই সময় একবার তাদের জাহাজ ডুবেী-পাহাড়ে ধাক্কা লেগে অচল হয়ে পড়ে। সৌরাবায়া থেকে তাদের কোম্পানির অন্য জাহাজ এসে তাদের জাহাজের মাল তুলে নিয়ে যাবার আগে সাতদিন ওরা সেইখানে পড়ে ছিল। একদিন সমূদ্রের বিষাক্ত কাকড়া খেয়ে জাহাজস্থদ্ধ লোকের কলেরা হল। এইখানে স্বশীল জিজ্ঞেস করলে—সবারই কলেরা হল ? —কেউ বাদ ছিল না বাৰু। খাবার পাওয়া যেত না, পাহাড়ের একটা গর্তে কাকড়া לכ-f. H. a