পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে २ॐS আটদিন রইলাম। তাকে মা বলে ডাকি। বুড়ীও আমায় বড় যত্ন করতে লাগল। বুড়ী বড় গরীব-ভাড়াটে ঘরে থাকে। তার ছেলে স্কুলে পড়ত। সে রাধুনিগিরি করে ছেলের পড়ার খরচ ও নিজেদের খরচ চালাতো। এখনও সে নারকেল তেলের গুদামের শেঠজীদের বাড়ী রাধে । কোনরকমে একটা পেট চলে যায়। বুড়ীকে পদ্মরাগ মণিটা আমি দেখাইনি— —এত কষ্ট করে গিয়ে ওটার বেলা ফাকি দিলে ? —ওই যে নটরাজন বলেছিল, পদ্মরাগ মণির গায়ে একটা আঁক-জোক আছে—ম্বা হদিস দেবে হীরেজহরতের—ওই হল ওখান না দেওয়ার গোড়ার কথা। ভাবলাম কী জানেন ? ভাবলাম এই, নটরাজনের ছেলে না-পাত্তা—বুড়ীর কাজ নয় ম্যাপ দেখে স্থলু সী ধাওয়া আর সেই দ্বীপের মধ্যে লুকোনো শহর খুজে বার করা। যদি ওকে দিই ওগুলো, এখানে পড়ে নষ্ট হবে । তার চেয়ে যদি আমি নিই, হয়ত চেষ্টা করলে একদিন না একদিন আমি সেখানে গিয়ে পৌছুতেও পারি। যদি হীরে জহরত পাই, বুড়ীকে আমি ভালভাবে খোরপোশ দিয়ে রাখব। কিন্তু যদি পদ্মরাগ মণিখান দিয়ে দিই—তবে হদিসটা হাতছাড়া হয়ে গেল। বুড়ী এখুনি অপরকে মণি বিক্ৰী করবে। যে কিনবে, সে মণির গায়ে আঁকা সীলমোহরের কোন মানেই বুঝবে না। লোহার সিন্দুকে আটক থাকবে জিনিসটা। তাতে কারো কোনো উপকার নেই। কী বলেন আপনি ? - —তোমার যুক্তি মন্দ না। যদিও আমার মনে হয় জিনিসটা দেওয়াই তোমার উচিত ছিল। যাদের জিনিস, তারা সেটা নিয়ে স্ব খুশি করুক না কেন। তোমার ওপর শুধু পৌঁছে দেওয়ার ভার। সেটা তুমি রাখলে নিজের কাছে ? —ই বাবুজি। এই দেখুন আমার কাছেই আছে। অস্বিন ওই আলোর কাছে । স্বশীল আলোর নিচে গিয়ে বিস্ময় ও কৌতুহলের সঙ্গে ওর প্রসারিত করতলের ওপর প্রায় ঝুকে পড়ল। মস্ত একখানা পাথর, একটু চেপ্টা গড়নের, উজ্জল লাল রঙের—তার ওপর cशाशाहे-काल रुद्र। . 變 স্বশীল ওর হাত থেকে সীলমোহরটা নিয়ে দেখলে উল্টেপাটে। খোদাই কাজ করা এত বড় পাথর সে কখনও দেখে নি। বড় সাইজের একটা কলার লেবেঞ্চুসের মত। সীলমোহরের মধ্যে চেয়ে সে অবাক হয়ে গেল—বড় একটা ওঁকারের ‘ওঁ’র লেজ জড়িয়ে জড়িয়ে পাকিয়েছে একটা বটগাছ কিংবা অন্য কোন গাছকে । তারপর সে আরও ভাল করে চেয়ে দেখলে— আসলে ওটা ওঁকার নয়, যদিও সেইরকম দেখাচ্ছে বটে। কোন নাগ-দেবতার মূৰ্ত্তি হওয়াও বিচিত্র নয়। ত্রিভুজাকৃতি কি একটা আঁকা রয়েছে ছবির বী-দিকে। কোন নাম বা সনতারিখ নেই। লোকটা বললে--কিছু বুঝলেন বাৰু ? —না, তবে হিন্দুর সঙ্গে এ জিনিসের সম্পর্ক আছে বলে মনে হল। দেড় হাজার টাকার জিনিসটা তুমি ধে বড় বিক্রি করে ফেল নি এতদিন ?