পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&\bo বিভূতি-রচনাবলী তারা হিন্দু নয়—হিন্দুর কঙ্কাল। ছুদিন ধরে ওরা বনের মধ্যে কত প্রাচীন দেওয়াল, ধ্বংসস্তুপ, দরজা, খিলান ইত্যাদি দেখে বেড়াল । জ্যোৎস্না রাত্রি, গভীর রাত্রে যখন ওরাং-ওটাংয়ের ডাকে চারিপাশের ঘন জঙ্গল মুখরিত হয়ে ওঠে, অজ্ঞাত নিশাচর পক্ষীর কুস্বর শোনা যায়, বস্ত রবারের ডালপালায় বাহুড় ঝটপট করে, তখন এই প্রাচীন হিন্দু নগরীর ধ্বংসস্তুপে বলে স্বশীল যেন মুহূর্তে কোন মায়ালোকে নীত হয়—অতীত শতাব্দীর হিন্দু সভ্যতার মায়ালোক-দিগ্বিজয়ী বীর সমুদ্রগুপ্ত কবি ও বীন-বাজিয়ে যে মহাযুগের প্রতীক, হুনবিজেতা মহারথ স্কন্দগুপ্তের কোদণ্ড-টঙ্কারে ধে যুগের আকাশ সন্ত্রস্তু। স্বশীল স্বপ্ন দেখে । সনৎকে বলে—বুঝলি সনৎ, জামাতুল্লাকে যথেষ্ট ধন্যবাদ ধে ও আমাদের এনেছে এখানে। এসব না দেখলে ভারতবর্ষের গৌরব কিছু বুঝতাম না! সনৎ এ কথায় সায় দেয়। টাকার চেয়ে এর দাম বেশি। ইয়ার হোসেন কিন্তু এসব বোঝে না । সে দিন-দিন উগ্র হয়ে উঠছে। এই নগরীর ধ্বংসস্তুপে প্রায় দশদিন কাটল। অথচ ধনভাণ্ডারের নামগন্ধও নেই, সন্ধানই মেলে না। জামাতুল্লাকে একদিন স্পষ্ট শাসালে—যদি টাকাকড়ির সন্ধান না মেলে তো তাকে এই জঙ্গলে টেনে আনবার মজা সে টের পাইয়ে দেবে। জামাতুল্লা স্বশীলকে গোপনে বললে—বাবুজি, ইয়ার হোসেন বদমাইস গুগু-ও না কৗ গোলমাল বাধায় ! স্বশীল ও সনৎ সৰ্ব্বদা সজাগ হয়ে থাকে রাত্রে, কখন কী হয় বলা যায় না । ইয়ার হোসেনের সশস্ত্র অম্লচরের দল দিন-দিন অসংঘত হয়ে উঠছে। একদিন জামাতুল্লা বনের মধ্যে খুজতে খুঁজতে এক জায়গায় একটি বড় পাথরের থাম আবিষ্কার করলে। থামের মাথায় তারতীয় পদ্ধতি অনুসারে পদ্ম তৈরি করা হয়েছে। স্বশীলকে ডেকে নিয়ে গেল জামাতুল্লা, স্বশীল এসব দেখে খুশি হল । স্বশীল ও সনৎ ছুজনে গভীর বনের মধ্যে ঢুকে থামটা দেখতে গেল।. সেখানে গিয়েই স্বশীল দেখলে থামটার সামনে আড়ভাবে পড়ে প্রকাগু একটা পাথরের চাঙ–যেন একখানা চৌরণ করা শানের মেঝে স্বশীল ক্যামেরা এনেছে থামটার ফটো নেবে বলে, পাথরটা সরিয়ে না দিলে পদ্মটির ছবি নেওয়া সম্ভব নয়। জামাতুল্লা বললে—পাথরখানা ধরাধরি করে এস সরাই— সরাতে গিয়ে পাখরখানা ষেই কাত অবস্থা থেকে সোজা হয়ে পড়ল, অমনি সনৎ চিৎকার করে বললে—দেখ, দেখ— সকলে সবিস্ময়ে দেখলে, খেখানে পাথরটা ছিল, সেখানে একটা স্বভৃঙ্গ যেন মাটির নিচে নেমে গিয়েছে। জামাতুল্লা ও স্বশীল হড়ঙ্গের ধারে গিয়ে উকি মেরে দেখলে, স্বভৃদটা হঠাৎ বেঁকে গিয়েছে, প্রথমটা সেজন্তে মনে হয় গর্তটা নিতান্তই অগভীর। স্বশীল বললে—আমি নামক—