পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে COA দেওয়ালের সেই জায়গা একেবারে সমতল, চিহ্নহীন-চারিপাশের অংশের সঙ্গে পৃথক করে নেওয়ার মত কিছুই নেই সেখানে । তবুও সে নিরাশ না হয়ে দেওয়ালের সেই জায়গাটাতে হাত বুলিয়ে দেখতে গেল। : হাত দেবার সঙ্গে সঙ্গে একটা আশ্চৰ্য ব্যাপার ঘটল। ঠিক ৰেখানে আঙুলের অগ্রভাগ শেষ হয়েছে সেই স্থানের খানিকট ষেন বলে গেল—অর্থাৎ ঢুকে গেল ভেতরের দিকে। একটা শব্দ হল পেছনের দিকে—ও পেছন ফিরে চেয়ে দেখলে বিটস্কবেদিকার তলাটা বেন ঈষৎ ফাক হয়ে গিয়েছে। ও ফিরে এসে ভাল করে লক্ষ্য করে দেখলে, গোলাকার বেদিকাটি তার নর্তকী-যুক্তিটস্বদ্ধ যেন একটা পাথরের ছিপি । বড় বোতলের মুখে যেমন কাচের স্টপার বা ছিপি থাকে, এ ষেন পাষাণ-নির্মিত বিরাট এক স্টপার । কিসের চাড় লেগে স্টপারের মুখ ফাক হয়ে গিয়েছে। ও নর্তকী-মূৰ্ত্তির পাদদেশে এবং গ্রীবায় দুই হাত দিয়ে মূৰ্ত্তিটাকে একটু ঘুরিয়ে দেবার চেষ্টা করতেই সেট সবস্থদ্ধ বেশ আস্তে আস্তে ঘুরতে লাগল। কয়েকবার ঘুরবার পরে ক্রমেই তার তলার ফাক চওড়া হয়ে আসতে লাগল। কী কৌশলে প্রাচীন শিল্পী পাথরের উপরটাকে ঘুর্ণামান করে তৈরি করেছিল ? এই মূৰ্ত্তিমৃদ্ধ বেদিক টেনে তোলা তার একার সাধ্যে কুলুবে না। জামাতুল্লা ও সনৎ দু'জনকেই আনতে হবে কোন কৌশলে সঙ্গে করে, ইয়ার হোসেনের দলের অগোচরে । সন্ধ্যার অন্ধকার নামবার বিলম্ব নেই। বহু দিন-রাত্রির ছায়া অতীতের এ নিস্তব্ধ কক্ষে জীবনের মুখ ধ্বনিত করে নি, এখানে গভীর নিশীথ রাত্রির রহস্ত হয়ত মামুষের পক্ষে খুব আনন্দদায়ক হবে না, মাঙ্গুষের জগতের বাইরে এর । স্বশীল লণ্ঠন হাতে উঠে এল আঁধার পাতালপুরীর কক্ষ থেকে। র্তাবুতে ঢুকবার পথে ইয়ার হোসেন বড় ছুরি দিয়ে পাখির মাংস ছাড়াচ্ছে । সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়ে বললে—কোথায় ছিলেন? —ছবি আঁকতে, মি: হোসেন । —লণ্ঠন কেন ? —পাছে রাত হয়ে যায় ফিরতে। বনের মধ্যে আলো থাকলে অনেক ভাল । —এত ছবি একে কী হয় বাৰু ? —ভাল লাগে । —আসল ব্যাপারের কী ? জামাতুল্লা আমাদের ফাকি দিয়েছে। আমি ওকে মজা দেখিয়ে ८ष्व ! —আমরা সকলেই চেষ্টা করছি! ব্যস্ত হবেন না মি: হোসেন— —আমি আর পাচদিন দেখব। তারপর এখান থেকে চলে যাব-কিন্তু ৰাবার আগে জামাতুঙ্গাকে দেখিয়ে বাব সে কার সঙ্গে জুয়োচুরি করতে এসেছিল।