পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

एश्रांब्रेझि >ጫ > হাতে আগেও তো খেয়েছি-আপত্তি কি ? তার পর বলিল-হুজুর, বিয়ের কথা যখন তুললেন তখন বলি। আর বছর শ্রাবণ মাসে একটা গায়ে পাঠশালা খুললাম। গায়ে একঘর আমাদেরই ব্রাহ্মণ ছিল। তার বাড়ীতে থাকি। ওর মেয়ের সঙ্গে আমার বিয়ের কথা সব ঠিকঠাক, এমন কি আমি মুঙ্গের থেকে ভাল মেরজাই একটা কিনে আনলাম—তার পর পাড়ার লোক ভাঙচি দিলে—বললে—ও গরীব স্কুলমাস্টার, চাল নেই, চুলো নেই, ওকে মেয়ে দিও না। তাই সে বিয়ে ভেঙে গেল। আমি সে গা ছেড়ে চলেও গেলাম । —মেয়েটিকে দেখেছিলে ? দেখতে ভাল ? —দেখি নি ? চমৎকার মেয়ে, হুজুর । তা আমাকে কেন দেবে ? সত্যিই তো । আমার কি আছে বলুন না ? দেখিলাম গনোরী বেশ দুঃখিত হইয়াছে বিবাহ ফাসিয়া যাওয়াতে, মেয়েটিকে মনে ধরিয়াছিল। তারপর অনেকক্ষণ বসিয়া সে গল্প করিল। তাহার কথা শুনিয়া মনে হইল জীবন তাহাকে কোনো জিনিস দেয় নাই—গ্রাম হইতে গ্রামাস্তরে ফিরিয়াছে দুটি পেটের ভাতের জন্ত ! তাও জোটাইতে পারে নাই। গাঙ্গোতাদের দুয়ারে চুরারে ঘুরিয়াই অৰ্দ্ধেক জীবন কাটাইয়া দিল । বলিল—অনেক দিন পরে তাই লবটুলিয়াতে এলাম। এখানে অনেক নতুন বস্তি হয়েছে শুনিলাম। সে জঙ্গল-মহাল আর নেই। এখানে যদি একটা পাঠশালা খুলি—তাই এলাম। চলবে না, কি বলেন হুজুর ? তখনই মনে মনে ভাবিলাম, এখানে একটা পাঠশালা করিয়া দিয়া গনোরীকে রাখিয়া দিব । এতগুলি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আমার মহালে নব আগন্তুক, তাহীদের শিক্ষার একটা ব্যবস্থা করা আমারই কৰ্ত্তব্য ; দেখি কি করা যায়। פסא অপূৰ্ব্ব জ্যোৎস্না-রাত। যুগলপ্রসাদ ও রাজু পাড়ে গল্প করিতে আসিল। কাছারি হইতে কিছু দূরে একটি ছোট বস্তি বসিয়াছে। সেখানকার একটি লোকও আসিল। আজ চার দিন মাত্র ঙাহারা জেলা হইতে এখানে আসিয়া বাস করিতেছে। লোকটি তাহার জীবনের ইতিহাস বলিতেছিল। স্ত্রী-পুত্র লইয়া কত জায়গায় ঘুরিয়াছে, কত চরে জঙ্গলে বন কাটিয়া কতবার ঘরদোর বাধিরাছে কোথাও তিন বছর, কোথাও পাচ বছর, এক জায়গায় কুলী নদীর ধারে ছিল দশ বছর। কোথাও উন্নতি করিতে পারে নাই। একবার লবটুলিয়া বইহারে আসিয়াছে, উন্নতি করিতে। এই সব যাযাবর গৃহস্থজীবন বড় বিচিত্র। কথা বলিয়া দেখিয়াছি ইহাদের সঙ্গে, সম্পূর্ণ