পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

पञांद्भsjक Sసి) মহিষ ধরিয়া লইয়া যায়, সেও রাজবংশের গৰ্ব্ব করিতে ছাড়ে না । বলিলাম—আমি জানি ভানুমতী তোমাদের কত বড় বংশ– ভানুমতী বলিল—তারপর শুনুন বাবুজী, আমাদের সেই মহিষটা বাঘে নিয়ে গেল । জ্যাঠামশায় যে মহিষটা এনেছিলেন। —কি করে ? —জ্যাঠামশায় ওই পাহাড়ের নীচে চরাতে নিয়ে গিয়ে একটা গাছতলায় বসে ছিলেন, সেখানে বাঘে ধরল। বলিলাম—তুমি বাঘ দেখেছ কখনও ? ভানুমতী কালে জোড়ী-ভুরু দুটি আশ্চর্ঘ্য হইবার ভঙ্গিতে উপরের দিকে তুলিয়া বলিল— বাঘ দেখিনি বাবুজী ! শীতকালে আসবেন চকুমকিটোলায়—বাড়ীর উঠোন থেকে গরু বাছুর ধরে নিয়ে যায় বাঘে— বলিয়াই সে ডাকিল—নিছনি, নিছনি—শোন— ছোট বোন আসিলে বলিল—নিছনি, বাবুজীকে শুনিয়ে দে তো আর বছর শীতকালে বাঘ রোজ রাতে আমাদের উঠোনে এসে কি করে বেড়াত। জগরু একদিন ফাদ পেতেছিল। ধরা পড়ল না । পরে হঠাৎ বলিল—ভাল কথা, বাবুজী, একখানা চিঠি পড়ে দেবেন ? কোথা থেকে একথান চিঠি এসেছিল, কে পড়বে, এমনি তোলা রয়েছে। যা নিছনি, চিঠিখানা নিয়ে আয়, আর জগরু-কাকাকেও ডেকে নিয়ে আয়— নিছনি চিঠি পাইল না । তখন ভানুমতী নিজে গিয়া অনেক খুজিয়া সেখানা বাহির করিয়া আমার হাতে আয়ি দিল । বলিলাম—কবে এসেছে এখান ? ভানুমতী বলিল—মাস ছ-সাত হবে বাবুজী—তুলে রেখে দিইছি, আপনি এলে পড়াবো । আমরা তো কেউ পড়তে পারি নে। ও নিছনি, জগরু-কাকাকে ডেকে নিয়ে আয় । চিঠি পড়া হবে—সবাইকে ডাক দে । ছ-সাত মাস পূর্বের পুরনো অপঠিত পত্ৰখানা আমি যুগলপ্রসাদের উকুনের আলোর পড়িতে বসিলাম—আমার চারিধারে বাড়ীসুদ্ধ লোক ঘিরিয়া বসিল চিঠি শুনিবার জন্ত । চিঠিখান কায়ের্থী-হিন্দীতে লেখা—রাজা দেবিরু পান্নার নামে চিঠি। পাটনার জনৈক মহাজন রাজা দেবিরুকে জিজ্ঞাসা করিয়া পাঠাইয়াছে, এখানে বিড়িপাতার জঙ্গল আছে কিনা—থাকিলে কি দরে ইজারা বিলি হয়। 够 এ পত্রের সঙ্গে ইহাদের কোন সম্পর্ক নাই—ইহাদের অধীনে কোন বিড়িপাতার জঙ্গল নাই । রাজা দোবরী, নামে রাজা ছিলেন, চকমকিটোলার নিজ বসতবাটির বাহিরে তার যে কোথাও এক ছটাক জমিও নাই একথা পাটনার উক্ত পত্ৰলেখক মহাজন জানিলে ডাকমাশুল খরচ করিয়া বৃথাপত্র দিত না নিশ্চয়ই।