পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१०३ বিভূতি-রচনাবলী কেউ তাকে বলতে পারবে না। বেলা বেশ পড়ে গেলে সে ছাত্রদের ছুটি দিয়ে লাঠি নিয়ে বাইরে বেরুবার উদ্যোগ করতে অনঙ্গ এসে বললে—ওগো, কিছু খেয়ে যাবে না—আজি দু'বাড়ী থেকে দুধ পাঠিয়ে দিয়েছিল, একটু ক্ষীর করেচি– বৈকালিক জলযোগ অনেকদিন অদৃষ্টে ঘটে নি। নানা অবস্থা বিপৰ্য্যয়ের মধ্যে আজ তিনটি বছর কাটচে স্বামী-স্ত্রীর। সুতরাং স্ত্রীর কথা গঙ্গাচরণের কানে একটু নতুন শোনালো। স্ত্রীকে বললে—ছেলেদের দিয়েচ ? —সে ভাবনা তো তোমার করতে হবে না, তুমি খেয়ে নাও— খেতে খেতে পরম তৃপ্তির সঙ্গে সে স্ত্রীকে বললে—এখানে আছি ভালই, কি বল ? অনঙ্গ-বেয়ের মুখে সমর্থনাচক মৃদু হাসি দেখা দিল, সে কোনো উত্তর করলে না। লক্ষ্মীর কৃপা যদি হয়ই, মুখে তা নিয়ে বড়াই করতে নেই। তাতে লক্ষ্মী রাগ করেন। গঙ্গাচরণ থানিকট ক্ষীরমুদ্ধ বাটিটা স্ত্রীর হাতে দিয়ে বললে—এই নাও— • —ও কি ! ন-না-সবটা থেয়ে ফেল— —তুমি এটুকু— —আমার জন্তে আছে গো আছে, সে ভাবনা তোমায় করতে হবে না— —ত হোক। আর থাবো না—এবার বিশ্বেস মশায়ের বাড়ী যাই। পাকাপাকি করে আসি । —বেশি দেরি কোরো না—এখেনে নাকি বুনো শুওর বেরোয় সন্ধের পর। আমার বডড ভর করে বাপু— গঙ্গাচরণ ছায়া-ভরা বিকেলে মাঠের রাস্তা বেয়ে গন্তব্যস্থানে যেতে যেতে কল্পনাচক্ষে তার ভবিষ্যৎ গৃহস্থালীর ছবি আঁকছিল। বেশ লাগে ভাবতে। এই সব মাঠে ভাল চাষের জমি পাওয়া যায়, যদি কিছু জমি ভাড়গোড়ার বাড়য্যে জমিদারদের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নেওয়ার যোগাযোগ ঘটে, যদি বিশ্বাস মশায়কে বলে করে একখানা লাঙল করা যায় তবে ভাত-কাপড়ের ভাবনা দূর হবে সংসারের। অনেকদিন থেকে সে-জিনিসের ভাবনাটা চলে আসচে। হয়তো ভগবান ঠিক জায়গাতেই নিয়ে এসে ফেলেচেন এতদিনে । বিশ্বাস মশায়ও যথেষ্ট আগ্রহ দেখালেন গঙ্গাচরণকে এ-গ্রামে বসাবার জন্তে । বললেন— আপনারা আমাদের মাথার মণি-আমি আপনাকে সব বন্দোবস্ত করে দিচ্ছি। —একটা পাঠশালার বন্দোবস্তু আপনি করে দিন— —সব হয়ে যাবে—আপাতত যাতে আপনার চলে তার ব্যবস্থা করতে হবে তো? বাড়ীতে . ८५८ख क'खन ? —আমার স্ত্রী ও দুটি ছেলে—