পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী تاریخ চোখে না দেখলে তা বিশ্বাস করতো না । বললে—আর ভাত দেবো ? —ত দুটো দাও মা । - —মুশকিল হয়েচে, খাবেন কি দিয়ে। তরকারি বাড়ন্ত । —তেতুল এক গাট দিতি পারব ? -ठषांट्स शैो ! —আমরা হোলাম গিয়ে গরীব মানুষ । সব দিন কি মাছ তরকারী জোটে ? কোনো দিন হোল না। তেতুল এক গাট দিয়ে এক পাতর ভাত মেরে দেলাম— —অনঙ্গের ভাল লাগছিল এই পিতার বয়সী সরল বুদ্ধের কথাবাৰ্ত্তা। ইনি বোধ হয় খুব ক্ষুধাৰ্ত্ত ছিলেন। বলতে নেই, কি রকম গোগ্রাসে ভাত কটা খেয়ে ফেললেন। আরও থাকলে আরও খেতে পারতেন বোধ হয়। কিন্তু বড্ড দুঃখের বিষয়, ভাত তরকারি আর ছিল না। খাওয়া-দাওয়ার পর অনঙ্গ বললে—তামাক সেজে দেবো ? —তোমাকে দিয়ে তামাক সাজাবো মা-লক্ষ্মী ? না—না—কোথায় তামাক বলে । আমি নিজে বলে তামাক সাজতি সাজতি বুড়ো হয়ে গেলাম। উনসত্তর বছর বয়েস হোল। —উনসত্তর ? —স্থ্যা । এই আশ্বিন মাসে সত্তর পোরবে। তোমরা তো আমার নাতনীর বয়সী। দীন্থ ভটচায হা হা করে হেসে উঠলো কথার শেষে । অনঙ্গ-বেী নিজেই তামাক সেজে কন্ধেয় ফু দিতে দিতে এল, ওর গাল দুটি ফুলে উঠেচে, আগুনের আভায় রাঙা হয়ে উঠেচে । দীনু শশব্যস্তে বললেন-ওকি, ওকি,—এই দ্যাথো আমার মা-লক্ষ্মীর কাও ! —তাতে কি ? এই তো বললেন—আমাকে নাতনীর সমবয়সী। —না-না, ওটা ভালো না। মা-লক্ষ্মী তুমি, কেন তামাক সাজবে? ওটা আমি পছন্দ করি নে—ষ্ঠাও ছকো আমার হাতে। ফু দিতি হবে না। অনঙ্গ-বে একটা মাদুর ও বালিশ নিয়ে এসে পেতে দিয়ে বললে–গড়িয়ে নিন একটু। বেলা পাচটার সময় পাঠশালার ছুটি দিয়ে গঙ্গাচরণ বাড়ী ফিরে কে একজন অপরিচিত বৃদ্ধকে দাওয়ায় শুয়ে থাকতে দেখে কিছু বুঝতে পারলে না। পরে স্ত্রীর কাছে সব শুনে বললে—ও, কামদেবপুরের সেই বুড়ে ভটচায। চিনেচি এবার। কিন্তু তুমি তা হোলে না খেয়ে আছ ? অনঙ্গ বললে—আহ, আমি তো যা-ত খেয়েই এক বেলা কাটাতে পারি। কিন্তু বুড়ে বামুন, ওর না-খাওয়ার কষ্টটা— —সে তো বুঝলাম। কিন্তু যা তা খেয়ে যে কাটাবে—যা-তা ঘরে ছিলই বা কি ? —তোমার সে ভাবনা ভাবতে হবে না। স্ত্রীকে গঙ্গাচরণ খুব ভালো করেই জানে। ওর সঙ্গে মিছে তর্ক করে কোনো লাভ নেই।