পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত २8> মেগে পেতে বেড়ানোই ওঁর স্বভাব। অনঙ্গ-বেী ধমক দিয়ে বললে—আবার ওই সব কথা ? —ত আমি কি করব এখন ? বলে তাই করি । —শুধু হাতে উনি না ফেরেন। বাপের বয়িসী বামুন। না হয় আমার হাতের পেটি বাধা দিয়ে দুটে টাকা এনে ওঁকে চাল কিনে দাও । দিতেই হবে, না দিলে আমি মাখা খুঁড়ে মরবো । চাল তো আমাদেরও কিনতে হবে । রাতে রান্না হবে না । ** গঙ্গাচরণ বাড়ীর বাইরে যাচ্ছিল, অনঙ্গ-বে বললে—পাকা কাকুড় দুখান খেয়ে যাও। বেরিও না । গঙ্গাচরণ বিরক্তির মুরে বললে—আমি বিনি মিষ্টিতে ফুটি কাকুড় খেতে পারি নে। ওসব বাঙালে খাওয়া তোমরা খাও । অনঙ্গ-বেী সকৌতুকে হাসি হাসি চোখ নাচিয়ে বললে—বাঙাল বাঙাল করে না বলচি, ভাল হবে না। আমি বাঙাল, আর উনি এসেচেন একেবারে মুকুমুদোবাদ জেলা থেকে — —সে আবার কি গো ? ও কথা তুমি আবার কোথায় শিখলে ? –শিখতে হয় গো, শিখতে হয়। সেই যে ভাতছালার উত্তরে ঘরামি জন ঘর ছাইতে আসতে মনে পড়ে ? ওরা বলতে না, মা, আমাদের বাড়ী মুকুমুদোবাদ জেলা— হি-হি-হি— একটু পরে বাইরের দাওয়ায় বসে দীমু ও গঙ্গাচরণ দু’জনেই পাক ফুটি কাকুড় খাচ্ছিল, খেজুর গুড়ের সঙ্গে । কোথায় অনঙ্গ-বে একটু খেজুর গুড় লুকিয়ে সঞ্চয় করে রেখেছিল সমর অসময়ের জন্তে । অনঙ্গ-বেী ওই রকম রেখে থাকে । গঙ্গাচরণ জানে অনেক সময় জিনিসপত্র ভেলকিবাজির মত বার করে অনঙ্গ । দীনু ভট চায কাসার বাট থেকে গুড়টুকু চেটেপুটে খেয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললে— আহা, খেজুর গুড়ের মুখ এবার আর দেখি নি। গঙ্গাচরণ বললে—ত বটে । —আগে আগে পণ্ডিত মশায়, গুড় আমাদের কিনতি হোত না। মুচিপাড়ায় বানে খেজুর রস জাল দিতে, ঘটি হাতে করে গিয়ে দাড়ালি আধ সের এক সের গুড় এমনি খেতি দিতো । সে সব দিন কোথায় যে গেল ! গঙ্গাচরণ বাড়ী থেকে বার হয়ে গেলেই অনঙ্গ-বেী দাওয়ায় এসে দাড়িয়ে বললে—কাকুড় কেমন খেলেন ? —চমৎকার মা চমৎকার। তুমি সাক্ষাৎ মা-লক্ষ্মী, কি আর বলবো তোমার। একটা কথা বলবো ? —কি বলুন না ? —ম একটু চা করে দিতি পারে?? অনঙ্গ-বেী বিপন্ন মুখে বললে—চা? مهد--- 4 . .f