পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশনি-সংকেত २8१ খুব মন্দও নয়। কথায় কথায় হেসে গড়িয়ে পড়া ওর একটা রোগের মধ্যে গণ্য । অনঙ্গ-বেয়ের হাসি পেল ক্ষিত্তীর হাসি দেখে। হাসতে হাসতে বললে—নে, বাপু থাম—তুই আবার জালালি দেখচি—এত হালিও তোর ! ছোট-বোঁ ঠোট উন্টে বললে—ওই বোঝে। ইতিমধ্যে বড়-বোঁ কি ভাবে দুটাে পান সেজে নিচু ঘরের দাওয়ার ধাপ থেকে নামলে । ছোট-বেী বললে—বিনি সুপুরিতে দিদি ? বড়বে ঝঙ্কার দিয়ে বললে—ওরে না না। খুঁজে পেতে ঘর থেকে উটকে বার করলাম । —কোথায় ছিল ? —তোকে বলবো কেন ? —কেন ? —তুই সৰ্ব্বস্ব উটকে বের করবি। তোর জালায় ঘরে কিছু থাকবার জো আছে ? আমি যাই গিৰী, তাই সব জিনিস যোগাড় করে তুলে লুকিয়ে রেখে দি । আর তুই সব উটকে উটকে বার করিস। ছোট-বেী চোখ পাকিয়ে ভুরু তুলে বললে—আমি ? —হ্যা, তুই। আমি কাউকে ভয় করে কথা বলবো নাকি ? তুই ছাড়া আর কে ? —তুমি দেখেচ দিদি ? —দেখিনি, একশো দিন দেখিচি। বলি, ঘর বলতি দুখানা বাতাসা রেখে দিইছিলাম, ওমা সেদিন দেখি নেই সেটুকু। তুই চুরি করে খেয়েচিম । কে ঘরে ঢুকতে গিয়েচে তুই ছাড়া ? ছেলেপিলের বালাই নেই যখন বাড়ীতে । কথাটা বোধ হয় নিতান্ত মিথ্যে ন4, কারণ এই কথার পরে ছোট-বোঁয়ের কথার স্বর ও তেজ কমে গেল। সে বললে—খেইচি যাও, বেশ করিচি। আমার জিনিস না ? —বডড যে স্বত্ব দেখাচ্চিস লা ! অনঙ্গ-বে বললে—আহা, কি তুচ্ছ জিনিস নিয়ে দু'বেলা তোমাদের ঝগড়া। থামে না বাপু । বড়-বে বললে—আমি অন্তাই কথাটি বলিচি কি বামুন-বোঁ তুমিই বিচের কর। ঘর বলে জিনিস লুকিয়ে রাখি এই যুয্যের বাজারে। তুই সেগুলো উটকে উটকে চুরি করে খাস কেন ? অনঙ্গ-বেী বললে—ও ছেলেমামুষ যে বড়-বোঁ । তোমার মেয়ে হোলে আজ অত বড় . মেয়েই হোত । হোত না ? - —আমার মেয়ের পোড়াকপাল ! * - —ওমা সেকি, পোড়াকপাল কি ? ছোট-বোঁ দেখতে স্বত্র কেমন ? চেয়ে দেখতে পাও না ? দু’ চোখের কি মাথা খেয়েচ !