পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ч3е е বিভূতি-রচনাবলী করচে মতির মৃতদেহটা ওভাবে পডে থাকতে দেখে। কিছুতেই ওর মনে স্বস্তি পাচ্চে না । তার নিজের যে সে অবস্থা নয়, তাহলে সে আর ময়না দুজনে মিলে মৃতদেহটার সৎকার করে আসতো । দুর্গ ভট্চায বললে—চলো ভায় আমরা দুজনে যা হোক করে ওটির ব্যবস্থা করে আসি । গঙ্গাচরণ একটু অবাক হয়ে গেল। দুর্গা ভট্টচাযের মুখে এত পরোপকারের কথা ! কিন্তু কণর মধ্যে কি থাকে বোঝা কি যায় ? সত্যিই সে তা করলেও শেষ পৰ্য্যন্ত । দুর্গ ভট্টচাৰ্য আর গঙ্গাচরণ আর কীপালীদের ছোট-বোঁ । আরও দু’দিন কেটে গেল। শোনা গেল গ্রাম ছেড়ে অনেক লোক পালাচ্চে । রাত্রিব মধ্যে অৰ্দ্ধেক লোক চলে গিয়েচে কাপালীপাডা থেকে । কাপালীদেব ছোট-বেী সকলে এসে জানালে অনঙ্গ-বেীকে, সেও চলে যাচে । অনঙ্গ-বে বললে—কোথায় যাবি রে ? —সবাই যেখানে যাচ্চে-শহরে ! সেখানে গেলে গোরমেণ্টে নাকি খেতে দেচ্চে । —কে বললে ? —শোনলাম, সবাই বলচে । —কার সঙ্গে যাবি ? তোব স্বামী যাবে ? —সে তো বাড়ী নেই । সে আজ দিন পাঁচ-সাত বেগুন বেচন্তে গিয়েচে শহরের হাটে । আর আজও তো ফিরল না । —কোথায় গেল ? —ত কি করে বলবো ? তুমিও যেখানে, আমিও সেখানে। —তুই যেতে পারবি নে। আমার কথা শোন ছুটকি, তোর অল্প বয়স, নানা বিপদ পথে মেয়েমানুষের। আমার কাছে থাক তুই। আমি যদি খেতে পাই তুইও পাবি। আমার ছোট বোনের মত থািকবি। যদি না খেয়ে মরি, দুজনেই মরবো । কাপালী-বোঁ সাতপাচ ভেবে চুপ করে রইল। অনঙ্গ-বে বললে—কথা দে, যাবি নে। —তুমি যখন বলচে দিদি, তোমার কথা ঠেলতে পারি নে। তাই হবে। —যাবি নে তো ? —ন । দাড়াও দিদি, আমি চট করে এক জায়গা থেকে আসি । এখুনি আসচি। ইটখোলার পাশে অশথতলায় যদু-পোডা অপেক্ষা করচে। বেলা আটটার বেশি নয়। ওকে দেখে বললে—এই বুঝি তোমার সকাল বেলা ? ইটখোলার কুলিদের হাজরে হয়ে গেল, বেলা দুপুর হয়েচে । ওবেলা কখন গাড়ী নিয়ে আসব ? সনের সময় ? ছোট-বেী বললে—গাড়ী আনতে হবে না । যদু-পোড়া আশ্চৰ্য্য হওয়ার স্বরে বললে—আনতে হবে না গাড়ী ? তার মানে কি ? হেঁটে