পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vGểb* বিভূতি-রচনাবলী এখনও ভুলি নাই! বয়স হইয়াছে, মনে হইল মোটে আঠার-উনিশ বছর বয়স ছিল খুড়ীমার ! কি ছেলে यांश्वरे इगन ! মানুষের মনে মানুষ এই রকমেই বাচিয়া থাকে। গত ছাব্বিশ বছরের বীথিপথ বাহিয়া কত নববধূ গ্রামে আসিয়াছেন, গিয়াছেন–কিন্তু দেখিলাম ছাব্বিশ বছর আগেকার আমাদের গ্রামের সেই বিশ্বত হতভাগিনী তরুণী বন্ধটি আজও এই গ্রামে বাচিয়া আছেন। বায়ুরোগ হাসখালি থেকে গোয়াড়ী কৃষ্ণনগর পর্য্যস্ত যে রাস্ত চলে গিয়েছে, ঐ রাস্তা বেয়ে যাচ্ছিলুম আমার এক আত্মীয়ের বাড়ী । বগুলা স্টেশনে নেমে সোজা পাকা রাস্তা। দুপুরের পর একাই হেঁটে চলেছি, পথে বড় একটা লোকজন নেই, বৃষ্টির দিন, আকাশ মেঘান্ধকার, জোলো হাওয়া বইছে, রাস্তার দ্বধারের বড় বড় গাছ থেকে টুপটাপ জল পড়ছে, দিনটা ঠাণ্ডা, রাস্তা হাটবার পক্ষে উপযুক্ত দিন বটে। ডোমচিতি, গোয়ালবাগি ছাড়িয়েছি। রাস্তার দু’ধারে ঘন ঘন বাগান। আরও আটদশ মাইল রাস্তা যেতে হবে। একটা বাধানো সাকোর ওপর বিশ্রাম করব বলে বসেছি, এমন সময় আর একজন পথ-চলতি লোক এসে আমার সামনের সাকোটাতে বসল। খানিকটা বসে সে আমার দিকে একবার চাইলে, তারপর একটু সঙ্কোচের মুরে বললে—বাবু, আপনার কাছে দেশলাই আছে ? তারপর দেশলাই নিয়ে বললে—আমার সঙ্গে তামাক আছে। একটু তামাক সাজব, খাবেন ? বললুম—না দরকার নেই। আমি— —লোকটা যেন একটু দুঃখিত হ’ল। বললে—না কেন বাবু, খান না ? আমি সেজে দিচ্ছি। এমন সুরে বললে যে, আমার জন্তে তামাক না সাজতে পেয়ে তার মনে যেন মুখ নেই। একটু অবাক হয়ে চেয়ে দেখলুম ওর দিকে, চিনিনে শুনিনে কোনো কালে, আমি তামাক খাই না খাই তাতে ওর কি আসে যায় ? অগত্যা বললুম—সাজ এইবার তাকে ভালো করে দেখলুম! বয়েস ত্রিশের মধ্যে, মুখশ্ৰী কাচ, লম্বা লম্বা চুল। গায়ে একটা থাকির সাট। কিন্তু ওর চোখ দু'টো এত শাস্ত ও এত নিরীহ যে, দেখলেই তার ওপর কোন সন্দেহ বা অবিশ্বাস আসে না । একটা ভাঙা ছাতি আর একটা বোচক ওর সম্বল, ধরন-ধারণে নিছক, খাটি ভবঘুরে । & দু'জনে একদিকেই পথ চলতে আরম্ভ করলুম তারপর থেকে। মামুদপুরের বাজারে এসে সন্ধ্যা হয়ে গেল। একটি মুীর দোকানে রাত্রের জন্তে আশ্রয় নিলুম দু’জনেই—কারণ