পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্ম ও মৃত্যু θάψό খাব । ওবেলা বরং রোধে । অনেকবার বলি বলি করেও কুমীর কথাটা সে কিছুতেই পিসিমাকে জিগ্যেস করতে পারলে না। একটু বিশ্রাম ক’রে বেলা পড়লে সে হাটতলার মধু ডাক্তারের ডাক্তারখানায় গিয়ে বসল। মধু ডাক্তারের চুল-দাড়িতে পাক ধরেচে, একটি ছেলে সম্প্রতি মারা গিয়েচে—সেই গল্প করতে লাগল। গ্রামের মক্তবের সেই বুড়ে মৌলবী এখনও আছে ; এখনও সেই রকম নিজের অঙ্কশাস্ত্রে পারদর্শিতার প্রসঙ্গে সাব-ইনস্পেক্টর মহিমবাবুর গল্প করে। মহিমবাৰু ত্রিশপয়ত্রিশ বছর আগে এ অঞ্চলে স্কুল সাব-ইনস্পেক্টরী করতেন। এখন বোধ হয় মরে ভূত হয়ে গিয়েচেন। কিন্তু কোনবার মক্তব পরিদর্শন করতে এসে নিজেই শুভঙ্করীর সারাকালির একটা অঙ্ক দিয়ে নিজেই কষে বুঝিয়ে দিতে পারেন নি, সে গল্প আজও এদেশে প্রচলিত আছে। এই মৌলবী সাহেবের মুখেই হীর এ গল্প বহুবার শুনেচে । সন্ধ্যা হবার পূর্বেই হীরু হাটতলা থেকে উঠল। মধু ডাক্তার বললে—বসে হে হীরু, সন্ধ্যেটা জালি-তারপর দু-একহাত খেলা যাক। এখন না হয় বড়ই হয়েচ, পুরোনো দিনের কথা একেবারে তুলে গেলে যে হে! হীরু পথশ্রমের ওজুহাত দেখিয়ে উঠে পড়ল। তার শরীর ভাল নয়, পুরোনো দিনের এই সব আবেষ্টনীর মধ্যে এসে পড়ে সে ভালো করে নি । কুমী এখানে আছে কিনা, এ কথাটা মধু ডাক্তারকেও সে জিগ্যেস করবে ভেবেছিল। ওদের একই পাড়ায় বাড়ী। কুমী মধু ডাক্তারকে কাক বলে ডাকে। কুমীদের সম্বন্ধে মাত্র সে এইটুকু শুনেছিল যে, কুমীর জ্যাঠামশাই বছর পাচেক হোল মারা গিয়েচেন এবং জাঠতুতে ভাইয়েরা ওদের পৃথক করে দিয়েচে । অন্যমনস্ক ভাবে চলতে চ তে সে দেখলে কখন কুমীদের পাড়াতে, একেবারে কুমীদের বাড়ীর সামনেই এসে পড়েচে । সেই জিউলি গাছটা, এই গাছটাতে একবার সাপ উঠে পার্থীর ছানা খাচ্ছিল, কুমী তাকে ছুটে গিয়ে খবর দিতে, সে এসে সাপ তাড়িয়ে দেবার জন্ত চিল ছোড়াছড়ি করে। এ পাড়ার গাছে-পালায়, ঘাসে-পাতায়, সন্ধ্যার ছায়ায়, শাকের ডাকে কুমী মাখানে । এই রকম সন্ধ্যায় কুমীদের বাড়ী বসে সে কত গল্প করেচে কুমীর সঙ্গে ! চুপ করে সে জিউলিতলায় খানিকটা দাড়িয়ে রইল।. • ♥ তার সামনের পথটা দিয়ে তেইশ ব্বিশ বছরের একটি মেয়ে দুটাে গরুর দড়ি ধরে নিয়ে আসচে। কুমীদের বাড়ীর কাছে বঁাশভলাটায় যখন এল, তখন হীরু চিনতে পারলে সে কুমী । -- প্রথমটা সে যেন অবাক হয়ে গেল.আড়ষ্টের মতে দাড়িয়ে রইল। সত্যিই কুমী ? এমন অপ্রত্যাশিতভাবে একেবারে তার চোখের সামনে ! কুমীই বটে, কিন্তু কত বড় হয়ে গিয়েছে সে ! হঠাৎ হীর এগিয়ে গিয়ে বললে-কুমী কেমন আছ ? চিনতে পারো ? কুমী চমকে উঠল, অন্ধকারে বোধ হয় ভাল করে চিনতে পারলে না, বললে—কে ? दि. ब्र. é-*-२७