পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जग्न ७ श्रृङ्का \צ9אס বললে—আপনার ভালো লেগেচে ?...আচ্ছ, গল্পগুলো ? ওগুলোর মধ্যে কিছু দেখলেন ? বিশেষ কোনো ধরা-ছোয়া না দিয়ে বললুম—বেশ প্রমিস আছে। আপনার বয়েস কম, লিখতে লিখতে হবে। ছেলেটি যেন আনন্দ কোথায় রাখবে ভেবে পেলে না। বললে, দেখুন আমার অনেকদিন থেকে সাধ আমি একজন লেখক হবো। আমি বি-এতে বাংলা নিয়েছিলুম বলে বাড়ীতে সবাই বকে। আমার খুড়তুতো ভাইয়ের বড় বড় চাকরি করে-তারা ভালো ইংরিজী জানে। তারা দাদার কাছে চিঠি লিখলে—ওকে এখন বাংলা ভূলতে বলে । বাংলা শিখে জীবনে কি হবে ? এখন একটু ইংরিজির দিকে মন দিতে বলে, যদি কিছু উন্নতি করতে চায়। আমি এ সব লিখি বলে বাড়ীর কেউ সন্তুষ্ট নয়। আমি আবার বাড়ীর ছোট ছেলে কিনা ৷ আমি যা লিখি দাদারা দেখতে চায়, লিখতে দেখলে বকণবকি করে। বলে, ওর মাথা খারাপ হ’য়ে গিয়েচে । ও-সব লিখে মিথ্যে সময় নষ্ট করচে । আমি মনে মনে তাদের খুব দোষী করতে পারলাম না একথা বলার জন্তে । ছেলেটি আপন মনেই বলে যেতে লাগল—এখানে মাস্টগরিটা পেয়ে গেলাম, গেজেট যেদিন বার হয়েচে, সেই দিনই চাকরি হ’ল আমার। এখানে এসে এক এক বেড়াই ; একজনও এমন কেউ নেই যে, দুটো ভাল কথা বলে, কি সংচচ্চর্ণ করে। সাহিত্য বিষয়ে কেউ খবরও রাখে না। বড ব্যাকওয়ার্ড জায়গা। আপনার সন্ধান পেয়ে ভাবলুম ওঁর কাছে যাই, উনি আমার লেখা-সম্বন্ধে উপদেশ দিতে পারবেন। তাই এলাম। কারো কাছে উৎসাহ না পেয়ে আমি এমন দমে গিয়েছি, আজ এক বছর লিখিই নি । তারপর ছোকরা আমায় বেশ বোঝাবার চেষ্টা করলে, সে বর্তমান সাহিত্যের খবর রাখে বা সে সাধারণ মানুষের পর্ব য়ের মধ্যে পড়ে না। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, ইবসেন, শ’, টলস্টয়, তরুণ-সাহিত্য, বৈষ্ণব কবিতা—ইত্যাদি হু হু করে মুখস্থ বিদ্যার মতো বলে গেল। —আচ্ছা, তরুণ-সাহিত্যবাদের মধ্যে রামচন্দ্র সরকারের লেখা-সম্বন্ধে . আপনার মত কি ? • * * আমি বিপদে পড়ে গেলুম, তরুণ সাহিত্যবাদের বই কিছু কিছু পড়লেও রামচন্দ্র সরকারের লেখা-সম্বন্ধে আমার কোন ধারণাই নেই। কিন্তু ছেলেটি যেমন আগ্রহের সঙ্গে এ-সব কথা পেড়েছে, তাতে বেশ বোঝা যায়, অনেক দিন পরে একটু উচ্চ বিষয়ে চচ্চ করতে পেরে ও খুব খুশি । হয়তো এমন শ্রোতা ওর অনেকদিন জোটে নি। এ অবস্থায় তাকে নিকৎসাহ করতে না পেরে রামচন্দ্র সরকার সম্বন্ধে একটা কাল্পনিক মত দেবার চেষ্টা করলুম। আমার কথা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে শুনলে। বললে, আপনি ঠিক বলেছেন । আমার কি মনে হয় জানেন ? ইবসেন বলেছেন—তারপর সে খানিকক্ষণ ধরে ইবসেন, মেটারলিঙ্ক, রবীন্দ্রনাথ প্রভৃতি অনেক নাম অনর্গল আবৃত্তি করে, তাদের নানা মত উদ্ধৃত করে নিজের একটা যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করবার চেষ্টা করলে—তার ভাবে মনে হল এ ধরনের কথা বলতেও সে বিশেষ আনন্দ পাচ্ছে—কথা বলতে বলতে আমার মুখের দিকে