পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনে পাহাড়ে 80Y. পথের পাশে একটা বড় গাছের ছাল ওপর থেকে খুলে ঝুলে পড়েছে। সেটা দেখিয়ে হরদয়াল সিং বললেন—বলুন তো এরকম কেন হয়েছে ? প্রশ্নটা আমার স্ত্রীকে উদ্দেশ করে। তিনি কিছু বলতে পারলেন না। আমি কিন্তু বুঝতে পেরেছিলাম আগেই। বন্ত হস্তীর দস্তাঘাতে বনস্পতির এই দশা। মি: সিংহ বললেন-টাটকা করেছে। এই দেখুন পায়ের দাগ। কাল রাতের ব্যাপার। সত্যই বটে। মাটির ওপরে হাতীর পায়ের দাগ এবং একটু দূরে হাতীর নাদ । বেশ বোঝা গেল সন্ধ্যার পরে এসব পথে যাতায়াত করা খুব স্থবিধাজনক নয়। এমন একটা জায়গায় এসেছি যেখানে রাস্তার পাশে অনেক নীচে একটা বনাবৃত উপত্যক দেখা যাচ্ছে। অর্থাং ষে বনের মধ্যে আমব বেড়াচ্ছি, সেটা যে অনেক উচু পাহাড়ের ওপরকার বন, নিম্নের উপুড়াকু দেখে,সেটা ভালোই বোঝা গেল। হরদয়াল সিং বললেন—কেমন, ধাবেম টাইগার হিলে ? -बांब्र कज्ज्ञ् ?. —চার মাইল কিংবা সাড়ে তিন মাইলু--- —ফিরতে তা হলে বেলা একটা বাজবে। সেখান থেকেই বাংলোতে ফিরবার কথা হোল। আমার স্ত্রী আর যেতেই চাইলেন না । এইবার যেখানে. আমরা ধূমপান ও বিশ্রামের জন্তে বসলাম, সে স্থানটিকে বেমালুম আফ্রিকা বলে চালিয়ে দিলেও কোন ক্ষতি ছিল না। এদিকে গভীর পাহাড়ী খাদ, অনেক নিচে অগণ্য বনস্পতির শীর্ষদেশ দেখা যাচ্চে, দুপুরের রোদ এসে পড়েছে তাদের ওপরে। বনের প্রকৃতিও অন্ত রকম। হরদয়াল সিং বললেন—ঐ হোল আমাদের মিসেলেনিয়াস ফরেস্ট । শাল ছাড়া আরও অনেক গাছ ওতে অাছে। —ওখানে নেমে চলুন দেখি না । —পথের ধারে ওরকম একটা বিরাট area পড়বে অন্ত জায়গায় । নীচে নেমে কষ্ট পেতে হবে না । ওখানে কিন্তু বিপদ আছে— —কেন ? — সাপের ভয় । অনেক সময় বড় বড় বিষাক্ত সাপ থাকে। একটু সাবধান হয়ে যাওয়া शूद्रकांद्र ! বাংলোতে যখন পোঁচেছি, তখন বেলা একটার কম নয়। আমি স্বান করতে চাইলুম নীচেকার সেই ঝর্ণার জলে, কেমন চমৎকার কুলুকুলুনাদিনী স্বচ্ছসলিলা বর্ণাট, বনের ছায়ায়, ছায়ায় বয়ে আসচে-- দুধারে কলের চিমনির মত কেঁদ আর শালের ভিড় লেইখানেই স্নান করে আসি । মিঃ সিংহ বললেন—না যাওয়াই ভালো । এসব ঝর্ণার জল অনেক সময় খারাপ থাকে ।