পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথের পাঁচালী እ›Sሕ» rBDLD BDuL uDuD DDB DD DBBB DBS LBLEK DBB BDBBB DuDDB DB -পালার নতুন শেখা গান গায়। গ্রামের মেয়েরা দলের ছেলেদের বাড়ী ডাকাইয়া যাহার ষে গান ভাল লাগিয়াছে তাহার মুখে সে গান ফরমাইশ করিয়া শুনিতে লাগিলেন। অপু আরও তিন চায়াটা নতুন গান শিখিয়া ফেলিল। একদিন লে যাত্রার দলের বাসায় অজয়ের সঙ্গে গিয়াছে, সেখানে তাহাকে দলের সকলে মিলিয়া ধরিল, তাহাকে একটা গান গাহিতে হইবে। সেখানে সকলে অজয়ের মুখে শুনিয়াছে সে খুব ভাল গান গাহিতে পারে। অপু বহু সাধ্যসাধনার পর নিজেয় বিস্থা ভাল করিয়া জাহির করিবার খাতিরে একটা গাহিয়া ফেলিল। সকলে তাহাকে ধরিয়া অধিকারীর নিকটে লইয়া গেল । সেখানেও তাহাকে একটা গাহিতে হইল। অধিকারী কালো রং-এর ভুডিওয়ালা লোক, আসরে জুড়ি সাজিয়া গান করে। গান শুনিয়া বলিল-এস না খোকা, দলে আসবে ? অপুর বুকখানা আনন্দে ও গর্বে দিশহাত হুইল। আরও সকলে মিলিয়া তাহাকে ধরে-এস, চলো তোমাকে আমাদের দলে নিয়ে যাই। অপুত্র তো ইচ্ছা সে এখনি যায়। যাত্রার দলে কাজ করা মন্ত্যজীবনের চরম উদ্দেশ্য, সেকথা এতদিন সে কেন জানিত না, ইহাই তো আশ্চৰ্য্যেয় বিষয় । সে গোপনে অজয়কে বলিল-আচ্ছ ভাই, এখন যদি আমি দলে যাই, আমাকে কি সাজতে দেবে ? অজয় বলিল-এখন এই সখী ঠখী, কি বালকের পার্ট এই রকম, তারপর ভাল ক’রে শিখলে অপু সখী সাজিতে চায় না-জন্ধিৱ মুকুট মাথায়ু সে সেনাপতি সাজিয়া তলোয়ার ঝুলাইবে, যুদ্ধ কৱিবে। বড় হইলে সে যাত্রার দলে যাইবেই, উহাই তাহার জীবনের ধ্রুব লক্ষ্য। অজয় তাহাকে চুপি চুপি কষ্টিপাথরের-রং একটা ছোকরাকে দেখাইয়া কহিল, এই যে দেখচে, এর নাম বিষ্ট তেলি। আমার সঙ্গে মোটে বনে না, আমার নিজের পয়সায় দেশলাই কিনে বালিশের তলায় বেথে শুষ্ট, দেশলাই উঠিয়ে নেয় চুরুট খেতে, আর দেয় না। আমি বলি আমার রাত্রে ভয় করে, দেশলাইট দাও। অন্ধকারে মন ফ্লমছম করে, তাই সেদিন চেয়েছিলাম ব’লে এমনি থাকড়া একটা মেরেচে ! নাচে ভালো বলে অধিকারী বড় খাতির করে, কিছু বলবারও ষো নেই দিন পাঁচেক পরে যাত্রা দলের গাওনা শেষ হইয়া গেলে তাহায় রওনা হইল। অজয় বাড়ীর ছেলের মত যখন তখন আসিত যাইত, এই কয়দিনে সে যেন অপুৱাই আর এক ভাই হুইয়া পডিয়াছিল। অপুৱাই বয়সী ছোট ছেলে, সংসারে কেহ নাই শুনিয়া সৰ্ব্বজয় তাহাকে এ কয়দিন অপুর মত যত্ন করিয়াছে। দুৰ্গাঁও তাঁহাকে আপন ভাইয়ের চোখে দেখিয়ছেতাহার কাছে গান শিখিয়া লইয়াছে, কত গল্প শুনাইয়াছে, তাহার পিসিমার কথা বলিয়াছে, তিনজনে মিলিয়া উঠানে বড় ঘর আঁকিয়া গঙ্গা-যমুনা খেলিয়াছে, খাইবার সময় জোর করিয়া বেশী থাইতে বাধ্য করিয়াছে। যাত্ৰাদলে থাকে, কে কোথায় স্তাখে, কোথায় শোয়, কি খায়, আহা বলিবার কেহ নাই; গৃহ-সংসারের যে স্নেহস্পর্শ বোধ হয় জন্মাবধিই তাহার ভাগ্যে ঘটে নাই, অপ্রত্যাশিতভাবে আজ তাহার স্বাদ লাভ করিয়া লোভীর মত সে কিছুতেই ছাড়িয়া যাইতে চাহিতেছিল না।