পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দু হোটেল 8ծ ইহাঙ্গের ভাত দিল। তাহারা খুব গোলমাল করিতে লাগিল, শুধু আলুভাজা আর ডাল দিয়া খাওয়া যায় ? ইহারা সকলেই রেলের ধাত্রী। স্টেশন হইতে তাহাদের হোটেলের চাকর বলিয়া আনিয়াছে যে একমাত্র তাহাদেরই হোটেলে এত সকালে সব হইয়া গিয়াছে—মাছের ঝোল, অম্বল পৰ্য্যস্ত। এখন দেখা যাইতেছে যে ডাল আর আলুভাজা ছাড়া আর কিছুই হয় নাই, এ কি অন্যায়—ইত্যাদি । পদ্ম কি দরজার কাছে মুখ বাড়াইয়া বলিল—ও ঠাকুর, দাও ন মাছ ভেজে, বাবুরা বলচেন শুনতে পাও না ? বাবুঘ খাবেন কি দিয়ে ? অর্থাৎ সেই পচা মাছ ভাজা আবার দাও। আজকার মাছ এখনও কোটা হয় নাই পদ্ম তাহ! জানে । হাজারি ঠাকুর কিন্তু পচা মাছ আর খরিদারদের পাতে দিবে না। সে বলিল—ভাজী মাছ আর নেই। যা ছিল ফুরিয়ে গিয়েচে । - পদ্ম ঝি বলিল—তবে একটু বস্থন বাবুরা, একখানা তরকারী করে দিচ্চে, বহন আপনার, উঠবেন না । শিক্ষামত মতি চাকর আসিয়া বলিল—ও ঠাকুর, বনগায়ের গাড়ী আসবার যে সময় হোল, রান্নাবান্না কিছু হোল না এখন ? ঘণ্টা পড়ে গিয়েচে ধে । খরিদ্ধারেরা ব্যস্ত-সমস্ত হইয়া উঠিল । ইহারাও সেই গাড়ীতে কৃষ্ণনগরে যাইবে । একজন বলিল—ঘণ্টা পড়ে গিয়েচে ? মতি চাকর বলিল-ই বাবু, অনেকক্ষণ। গাড়ী গাংনাপুর ছেড়েচে—এল বলে। মাছভাজ খাওয়া মাথায় থাকুক—তাহার। তাড়াতাড়ি উঠতে পারিলে বঁাচে । গাড়ী ফেল হইয়া গেলে অনেকক্ষণ আর গfডী নাই । পদ্ম ঝি বলিল—আহাঁ-হাঁ উঠবেন না বাবুরা, ধীরে -স্বন্থে খান । মাছ ভেজে দাও ঠাকুর, আমি তাড়াতাড়ি কুটে দিচ্চি ৷ বহন বাবুর । খরিদ্ধারেরা উঠিয়া পডিল—ধীরভাবে বসিয়া খাওয়া তাহাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাহার। চলিয়া ধাইতেই পদ্ম ঝি বলিল—যাক, এইবার মাছগুলো কুটি । এত সকালে কোন হোটলে রাস্না হয়েচে ? ছ’খানা মাছের গাদা বেঁচে গেল । এই জুয়াচুরিগুলা হাজারি পছন্দ করে না। শুধু এখানে বলিয়া নয়, রেল বাজারের সব হোটেলেই এই ব্যাপার সে দেখিয়া আসিতেছে। খরিদারকে খাওয়াইতে বসাইয়া দিয়া বলে—বাবু, গাড়ীর ঘণ্টা পড়ে গেল। খরিদ্ধার আধপেট খাইয়া উঠিয়া যায়, হোটেলের লাভ'। fছঃ—াধ্য পয়সা গুনিয়) লইয়: এ কি জুয়াচুরি ? হাজারি ঠাকুর এতদিন এখানে কাজ করিতেছে, কখনো মুখ দিয়া একথা বাহির করে নাই যে ট্রেনের সময় হইয়া গেল । অনেক সময় ট্রেনের সময় না হইলেও ইহারা মিথ্যা করিয়া ধুয়া তুলিয়া দেয়, যাহাতে ■ 8 ـ فة . ة .ةf