পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদর্শ হিন্দু হোটেল ఏ ) তেমনি ভয়, সঙ্কোচ ও মনিবের প্রতি সন্ত্রমের ভাব তার সারা দেহমনে হঠাৎ কোথা হইতে ৰেন উড়িয়া আসিয়া ভর করিল। সে পুরোনো দিনের মত কাচুমাচু ভাবে বলিল-আজ্ঞে তা আপনার কৃপায় এক রকম— আজে, তা বাবু বেশ ভাল আছেন ? —আজকাল আছ কোথায় ? —আজো গোপালনগরে কুতুবাবুদের বাড়ীতে আছি। —বাড়ীর কাজ । কদিন আছ ? —এই চার মাস আছি বাবু। —তা বেশ, তবে সেখানে মাইনে আর কত পাও ? হোটেলের মত মাইনে কি করে দেবে গেরস্ত ঘরে ? বেচু চকত্তির এই কথার মধ্যে হাজারি এক ধরণের স্বরের আঁচ পাইল। ব্যাপার কি ? বেচু চকত্তি কি আবার তাহাকে হোটেলে রাখিতে চান ? তাহার কৌতুহল হইল শেষ পর্য্যন্ত দেখাই যাক না কি দাড়ায় । সে বিনীত ভাবে বলিল—ঠিক বলেছেন বাবু, তা তো বেশী নয়। গেরস্তবাড়ী কোথা থেকে বেশী মাইনে দেবে ? —তারপর কি এখন আমাদের এখানে এসেছ ঠাকুর ? —আঞ্জে হ্য, বাবু। —কি মনে ক’রে বলে তো ? থাকবে এখানে ? হাজারি কিছুমাত্র না ভাবিয়াই বলিল—সে বাবুর দয়া । –তা বেশ বেশ, থাকো না কেন, পুরোনো লোক, বেশ তো । যাও কাজে লেগে যাও । তোমার কাপড়-চোপড এনেছ ? কই ? —না বাবু, আগে থেকে কি করে আনি । সে সব গোপালনগরে রয়েছে। চাকুরিতে দয়া করে রাখবেন কি না রাখবেন না জেনে কি ক’রে সে-সল— —আচ্ছা আচ্ছ, যাও ভেতরে যাও । রতন ঠাকুরের অস্কখ করেছে, বংশী একা আছে, তুমি কাজে লাগো এবেলা থেকে। ভাঙা ভাংটো এ মাসের কাটা দিনের মাইনে তুমি আগাম নিও । হাজারি কৃতজ্ঞতার সহিত বেচু চকত্তিকে আর একবার ঘাড় খুব নীচু করিয়া হাত জোড় করিয়া প্রণাম করিয়া কলের পুতুলের মত রান্নাঘরের দিকে চলিল । সামনেই বংশীঠাকুর । 曝 তাহাকে দেখিয়া বংশী অবাক হইয়া চাহিয়া রহিল। হাজারি বলিল—বাবু ডেকে বহাল করলেন যে ফের ! ভাল আছ বংশী ? তোমার সেই ভাগ্নেটি ভাল আছে ? বংশী বলিল—আরে এস এস হাজারি-দা । তোমার কথা প্রায়ই হয়। তুমি বেশ ভাল