পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S ०२ বিভূতি-রচনাবলী হাসিয়া বলিল—টেপি বাসন নিয়ে পুকুরে গিয়েছে—এসে বসে মা । —কাকাবাবু কোথায় ? হাজারি কাল রাত্রে অতসীদের বাড়ী গুরুতর আহার করিলেও আজ ইটিয়া তিন ক্রোশ পথ রাণাঘাট ধাইবে, এই ওজুহাতে বড় এক বাটি চালভাজা মুন লম্বা সহযোগে ঘরের ওদিকে দাওয়ায় বসিয়া চৰ্ব্বণ করিতেছিল—অতসী পাছে এদিকে আসিয়া পড়ে এবং তাহার চালভাজা খাওয়া দেখিয়া ফেলে সেই ভয়ে বাটিটা সে তাড়াতাড়ি ক্টোচার কাপড় দিয়া 5fं द्विज ।। অতসী আসিয়া বলিল—কই কাকাবাবু কোন দিকে বসে ? ও, খুব সময়ে চালভাজার বাটি ঢাকিয় ফেলিয়াছে সে। অতসী তাহাকে রাক্ষস ভাবিত —রাত্রের ওই ভীষণ খাওয়ার পরে সকাল হইতে না হইতেই— —এই যে মা—কি মনে করে এত সকলে ? —আপনি আমাদের বাড়ী দুপুরে খাবেন তাই বলতে বলে দিলেন বাবা-— —না মা আমি এখুনি বেরুচ্ছি রাণাঘাট—ছুটি তো নেই—আর কাল রাতে যে খাওয়া হয়েছে তাতে— —তবে টেপি আর খুডীম খাবেন—ওঁদের নেমস্তন্ন—আমি বলে যাচ্ছি ওঁদের । বলিয়া অতসী দাওয়ায় উঠিয়া নিজেই পি-ড়ি পাতিয়া বসিয়া গেল দেখিয়া হাজারি প্রমাদ গণিল । একে সময় নাই, দশটার মধ্যে হোটেলে পৌঁছিয়া রাস্লা চপাইতে ইষ্টবে। এক বাটি চালভাজা চিবাইতেও তো সময় লাগে ! হতভাগা মেয়োণ সব মাটি করিল ! ---বাটিটা লুকাইয়া বসিয়া থাকাই বা কতক্ষণ চলে ? অতসী বলিল—কাকাবাবু, আমার সঙ্গে যদি আপনার আর দেখা না হয় ? —কেন দেখা হবে না ? অতসী লাজুক মুখে বলিল—ধরুন যদি আমি—-এখান থেকে যদি— —বুঝেছি মা, ভালই তো, আনন্দের কথাই তো । —আপনার তাড়াতে পারলে বাচেন তা জানিষ্ট । মার মুখেও সেই এক কথা, বাবার মুখেও সেই এক কথা । সে যা হয় হবে আমি তা বলছি নে। আমি বলছি আপনি আজ থেকে যান, আমি যে কথা দিয়েছিলাম আপনার কাছে—সেই টাকা, মনে আছে তো ? আপনাকে তা আজ দিয়ে দিই । যদি বলেন তো এখুনি আনি । আমার মনের ভার কমে যায়, তারপর যেখানে আপনার আমায় বিদেয় করে দেন দেবেন— —ওকি মা । বিদেয় তোমায কেউ করছে না । অমন কথা বলতে নেই। ---কিন্তু টাকা নিতান্তই দেবে তা’হলে ? —ষখন বলেছি, তখন আপনি কি ভেবেছিলেন কাকাবাবু আমি মিথ্যে বলছি ? —তা ভাবিনি— আচ্ছা ধরে এমন তো হতে পারে, আমি হোটেল খুলে লোকসান দিলাম, তখন তোমার টাকা তো শোধ দিতে পারবো ন; ?