পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী 8כל করিয়া দিল । টেপি বলিল—লক্ষ্মণের শক্তিশেল আবার কি পালার নাম ? ওরকম নাম তো টকির পালার থাকে না ? তাদের নাম আমি শুনেছি অতসীদির কাছে, সে তো অস্থ্যরকম— —ই ই—তুই আর অতসৗদি ভারি সব জানিস আর কি ! যা—সর দিকি—ওই কয়লার ঝুড়িট৮– 戲 —ও মামাবাবু, খাওয়াHাওয়া হোল—বলিয়া বংশীর ভাগ্নে সেই স্বন্দর ছেলেটি বাড়ীর মধ্যে চুকিতেই টেপির মা, পাড়াগেয়ে বউ, তাড়াতাড়ি মাথায় ঘোমটা টানিয়া দিতে গেল। টেপি কিন্তু নবাগত লোকটির দিকে কৌতুহলের দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। হাজারি বলিল--এসে বাবা এসো—ঘোমটা দিচ্ছ কাকে দেখে ? ও হোল বংশীর ভাগ্নে । আমার হোটেলে খাতাপত্র রাখে। ছেলেমাহধ—ওকে দেখে আবার ঘোমটা— বংশীর ভাগিনেয় আসিয়া টেপির মার পায়ের-ধুলা লইয়া প্ৰণাম করিল। হাজারি মেয়েকে বলিল—তোর নরেন দাদাকে প্রণাম কর টেপি । এইটি আমার মেয়ে, বাবা নরেন । ও বেশ লেখাপড়া জানে—সেলাইয়ের কাজটাজ ভাল শিখেছে আমাদের গায়ের বাৰুর মেয়ের কাছে । টেপির হঠাৎ কেমন লজ্জ করিতে লাগিল । ছেলেটি দেখিতে যেমন, এমন চেহারার ছেলে সে কখনো দেখে নাই—কেবল ইহার সঙ্গে খানিকটা তুলনা করা যায় অতসীদি'র বরের। অনেকটা মুখের আদল যেন সেই রকম । , বংশীর ভাগ্নেও তাহার স্বচ্ছন্দ হৃষ্ঠতার ভাব হারাইয়। ফেলিয়াছে। চোখ তুলিয়া ভাল করিয়া চাওয়া যেন একটু কষ্টকর হইয়া উঠিতেছে । টেপির দিকে তো তেমন চাহিতেই পারিল না । হাজারি বলিল-মুর্শিদাবাদের গাড়ী থেকে ক'জন নামলো আজ ? —নেমেছিল জনদশেক, তার মধ্যে তিনজনকে বেচু চক্ষত্তির চাকর একরকম হাত ধরে জোর করেই টেনে নিয়ে গেল। বাকি সাতজন আমরা পেয়েছি—আর বনগার ট্রেন থেকে এসেছিল পাচজন । —ইষ্টিশানে গিয়েছিল কে ? —ব্রজ ছিল, রাখালও ছিল বনগার গাড়ীর সময় । ব্রজ বল্পে বেচু চক্কত্তির চাকরের সঙ্গে খন্ধের নিয়ে তার হাতাহাতি হয়ে ৰেতো আজ । —না না, দরকার নেই বাবা ওসব । হাজার হোক, আমার পুরোনো মনিব । ওদের খেয়েই এতকাল মাহূব-হোটেলের কাজ শিখেছিও ওদের কাছে । শুধু রাধতে জানলে তো হোটেল চালানো ধায় না বাবা, এ একটা ব্যবসা । কি করে হাট-বাজার করতে হয়, কি করে খন্ধের তুষ্ট করতে হয়, কি করে হিসেবপত্র রাখতে হয়—এও তো জানতে হবে। আমি ছ’বছর ওদের ওখানে থেকে কেবল দেখতাম ওরা কি করে চালাচ্ছে । দেখে দেখে শেখ । এখন সব পারি।