পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՖԳՀ বিভূতি-রচনাবলী উপৰোগী করিয়া তুলিল বটে, কিন্তু বিপিনের ভয় হইতেছিল, মেঝেতে যে রকম বড় বড় চারপাচটা ইছুরের গর্ত হইয়াছে রাত্রিবেলা সাপখোপ না বাহির হয় । চাকর ছোকরা একটি কাচভাঙা হ্যারিকেন লণ্ঠন জালিয়া ঘরের মেঝেতে রাখিয়া বলিল, লায়েববাবু রাত্রে কি খাবা ? —কিছু খাব না। তুই বা । —সে কি বাৰু! তা কখনও হ’fত পারে ? খাব না কিছু, রাত কাটাবা কেমন ক’রে ? একটু দুধ দেখে আসি পাড়ার মধ্যে, আপনি বসেন বাবু । এই ছোকরা চাকর যে যত্ন করে, দরদ দেখায়, বিপিন অনেক আপনার লোকের কাছেও তেমন ব্যবহার পায় নাই, একথা তাহার মনে হইল । অন্ধকার রাত্রি । কাছারির সামনে একটু ফাকা মাঠ, অন্ত সব দিকে ঘন বঁাশবন, এক কোণে একটা বড় বাদাম গাছ। অনাদি চৌধুরীর বাবা /হরিনাথ চৌধুরী কাছারি-বাড়ীতে এটি শখ করিয়া পুতিয়াছিলেন, ফলের জন্য নয়, বাহার ও ছায়ার জন্ত । বাশবনে অন্ধকার রাত্রে বঁাকে বাকে জোনাকি ঘুরিয়া ঘুরিয়া চক্রাকারে উড়িতেছে, ঝি ঝ ডাকিতেছে, মশা বিন বিন করিতেছে কানের কাছে—কাছারির কাছাকাছি লোকজনের বাস নাই—ভারী নির্জন । বিপিন একা বসিয়া বাহিরের দিকে চাহিয়া ভাবিতে লাগিল। কত কথাই মনে আসে ! বাড়ী হইতে আসিয়া মন ভাল নয়, হাসপাতালে ছোট ভাইটার রোগশীর্ণ মুখ মনে পড়িল । BBBBB BBBB BB BB BBBBS BBBBB BBB BBS BBB BB BBB নাই, যেখানে দেন নাই - আজ শনিবার, সামনের বুধবারে মহল হইতে চল্লিশট টাকা ও একগাদা ফল, তরকারিপত্র, মাছ, দই জমিদার-বাড়ী লইয়া বাইতে श्रुंद জামাইয়ের অভ্যর্থনার ধোগাড় করিতে। তিন দিনের মধ্যে এ গরীব গাঢ় চল্লিশ টাকা আদায় হওয়া দূরের কথা, দশটি টাকা হয় কিনা সন্দেহ–অথচ জমিদার বা জমিদার-গিল্পী তা বুঝিবেন ন!—দিতে না পারিলেই মুখ ভারী হইবে তাদের ! কি বিষম মুশকিলেই সে পড়িয়াছে। অথচ চিরকাল তাহাদের এমন অবস্থা ছিল না। বিপিনের বাবা এই কাছারিতে এক কলমে উনিশ বছর কাটাইয়া গিয়াছেন, এই জমিদারদের কাজে ! ধথেষ্ট অর্থ রোজগার করিতেন, বাড়ীতে লাঙল রাখিয়া চাষবাস করাইতেন, গ্রামের মধ্যে যথেষ্ট নামডাক, প্রতিপত্তি ছিল । বাবা চক্ষু বুজিবার সঙ্গে সঙ্গে সব গেল। কতক গেল দেনার দায়ে, কতক গেল তাহারই বদখেয়ালিতে। অল্প বয়সে কাচ টাকা হাতে পাইয়া কুসঙ্গীর দলে ভিড়য়া স্কৃতি করিতে গিয়া টাকা তো উড়িলই, ক্রমে জমিজমা বাধা পড়িতে লাগিল । তারপর বিবাহ । সে এক মজায় ব্যাপার। তখনও পর্য্যন্ত যতটুকু নামডাক ছিল পৈতৃক আমলের, তাহারই ফলে এক জৰস্থাপন্ন বড় গুহুস্থের ঘরের মেয়ের সহিত হইল বিবাহ । মেয়ের বাৰা নাই, কাৰুণ ৰক্ত চাকুরি করেন, শালাশালীর সব কলেজে-পড়া, বিপিন ইংরাজীতে কোনও রকমে নাম লই করিতে পাৰে