পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९ রাণাঘাট হাতপাতালে বিপিন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করিল। বলাই তাহাকে দেখিয়া কান্নাকাটি করিতে লাগিল বাড়ী লইয়া যাইবার জন্ত । কিন্তু বিপিনের মনে হইল, ভাই ষে সম্পূর্ণ আরোগ্য হুইয়াছে তাহ নয়, এ অবস্থায় তাহাকে লইয়া যাওয়া কি উচিত হইবে ? - বিপিন কৈবর্তের মেয়ে সেই নার্সটিকে আড়ালে ভাকিয়া বলিল, আমার ভাই বাড়ী যেতে চাইছে, কান্নাকাটি করছে, ওকে এখন নিয়ে যেতে পারি ? নাস বলিল, নিয়ে যাও বাবু, তোমার ভাই আমাকে পধ্যস্ত জালাতন করে তুলেছে বাড়ী যাব বাড়ী যাব ক’রে । নেফ্রাইটিসের রুগী, যা, সেরেছে, ওর বেশি আর সারবে না। কেন এখানে মিথ্যে রেখে কষ্ট দেবে ! তাহার মনে হইল, নাস ধেন কি চাপিয়া যাইতেছে। সে বলিল, ও কি বাঁচবে না ? নাস ইতস্তত করিয়া বলিল, না, তা কেন, তবে শক্ত রোগ। বাড়ী নিয়ে গিয়ে একটু সাবধানে রাখতে হবে । নিয়েই ধাও বাড়ী, এখন তো অনেকটা সেরেছে । বিপিনের মনটা খারাপ হইয়া গেল। সে গিয়া মিশনের বড় ডাক্তার আর্চার সাহেবের করিল। সভ্য হইয়া গিয়াছে। আর্চার সাহেব নিজের বাংলোর বারান্দায় ইজি-চেয়ারে চুপ করিয়া বসিয়া ছিলেন । বয়স প্রায় পঞ্চান্ন-ছাপ্পাল্প, দীর্ঘাকৃতি, সবল চেহারা । মাথার সামনে টাক পড়িয়া গিয়াছে। আজ ত্রিশ বৎসর এখানে আছেন, বড় ভাল লোক, এ অঞ্চলের সকলে আর্চার সাহেবকে ভালবাসে । বিপিন গিয়া বলিল, নমস্কার, ডাক্তার সাহেব । আর্চার সাহেব বিপিনকে চেনেন না, বলিলেন, এস, আপনি কি বলছেন ? আর্চার সাহেব বাংলা বলেন বটে, তবে একটু ভাবিয়া, একটু ধীরে ধীরে, ধেখানে জোর দেওয়া উচিত সেখানে জোর না দিয়া এবং যেখানে জোর দেওয়া উচিত নয় সেখানে ८ष्क्रांद् िध्रिीं । বিপিন বলিল, আমার ভাই বলাই চাটুজ্জে ছ নম্বর ওয়ার্ডে আছে, নেফ্রাইটিসের অমুখ, তাকে বাড়ী নিয়ে যেতে পারি ? সে বড় ব্যস্ত হয়েছে বাড়ী যাবার জন্তে । —ই ই, ওই ওয়ার্ডের ছোকুরা রুগী ! নিয়ে যান। —সাহেব, ও কি সেরেছে ? —সে পূর্বের অপেক্ষা সেরেছে। কঠিন রোগ, একেবারে ভাল ভাবে পারতে এক বছর লাগবে। বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে যত্ন করবেন, মাংস খেতে দেবেন না। —ত হ’লে কাল সকালে নিয়ে ধাৰ ।