পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার ২১৯ বিপিন জানে ; স্বতরাং সে নিজেও এই অবসরে একটু বিশ্রাম করিয়া লইবে । চাকরকে ভাকিয়া বলিল, খামহরি, ও খামহরি, বাবু নামবার আগে আমায় ডেকে দিস যদি ঘুমিষে পড়ি, বুঝলি ? আর একটু তামাক সেজে নিয়ে আয় । १ একটু পরে মানীকে ঘরে ঢুকিতে দেখিয়া বিপিন আশ্চর্ষ হইয়া গেল। বান্তিরের ঘরে মানীকে সে আসিতে দেখে নাই কখনও । মানী বলিল, বিপিনদী, রাগ পডেছে ? বিপিন মানীর মুখের দিকে চাতিয়া বলিল, আচ্ছ, তুই কি ক’রে জানলি জামি চলে যাচ্ছি। কেউ তো জানে না। খামহরি চাকরকে জিজ্ঞেস ক’রে জানলাম, আমি কখন এলেছি তা পর্য্যস্ত সে খবর রাখে না । মানী হাসিতে হাসিতে বলিল, আমার টনক আছে মাথায় বিপিনদ); আমি জানতে পারি। —কি ক’রে বল না মানী, সত্যি, আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম তোকে দেখে । মানী তবুও হাসিতে লাগিল। কৌতুক পাইলে সে সহজে ছাড়িবার পাত্র নয়, বিপিন তাহ ছেলেবেলা হইতে দেখিযা আসিতেছে, এবং ইহfও একটা কারণ যে জঙ্ক মানীকে তাহার বড় ভাল লাগে । —আচ্ছ, হালি এখন একটু বন্ধ থাক গে। কথার উত্তর দে । মানী দোরের কাছে দাড়াইয়া ছিল, দরজার শিকলটা দুই হাতে ধরিয়া তাহার হালিবার ভঙ্গি দেখিয়া বিপিনের মনে হইতেছিল, মানী এখনও যেন তেমনই ছেলেমানুষ আছে, শিকল ছাডিয়া মান দরজার পাশে একখানা চেয়ারে বসিল । গম্ভীর মূখে বলিল, আচ্ছা, তুমি কি রকম মানুষ বিপিনদী ! এসেছ কথন, তা জানি না । একবার দেখা পর্ষ্যস্ত করলে না। তারপর বাবা বুড়ো মাহুষ কি বলেছেন না বলেছেন, তুমি আমনই চ’টে গেলে, আর এই ঠিক দুপুরবেলা, খাওয়া না দাওয়া না, কাউকে কিছু না ব'লে পালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল পুটলি হাতে ! —তুই জানলি কি ক’রে ? —আমি জানৰ কি ক’রে ? বাবা রান্নাঘরে গিয়ে মা’র কাছে বললেন যে, তোমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে কি নিয়ে । মাকে বললেন, তামহরিকে দিয়ে তোমার নাইবার তেল পাঠিয়ে দিতে। বাবার মুখে তাই শুনে আমার ভয় হ’ল, আমি তো তোমায় চিনি। তাড়াতাড়ি বাইরের ঘরের দরজা পধ্যস্ত এসে দেখি, তুমি ওই বাতাবি-নেৰুতলা পৰ্য্যস্ত চ’লে গিয়েছ । চেচিয়ে ডাকতে পারি না তো আর । তখনই ছুটে খিড়কি-দোরে গেলুম, রাস্তার বঁাকে তোমায় অসন্তেষ্ট হলে । বাপ রে, কি রাগ ।