পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 বিপিন পাঁচ ছয় টাকা খরচ করিয়া রাণাঘাট হইতে কুইনাইন, লাইকার আর্সেনিক, লাইকার অ্যামোনিয়া, এসিড এন. এম. ভিল. প্রভৃতি কয়েকটি ঔষধ আনাইল, যাহা সাধারণ ম্যালেরিয়া জরের প্রেস্ক্রিপশনে লাগে বলিয়া বইতে লিখিয়াছে। অ্যালক্যালি-মিশরের উপকরণও ওই সঙ্গে কিছু আনাইল । আনাইবার পরদিনই কামিনীর প্রতিবেশিনী হাবু ঘোষের দিদিমা আসিয়া বলিল, ও নায়েববাবু, কামিনীর বড় অস্বখ হয়েছে আজ তিন চার দিন হ’ল, একবার আপনারে যেতে বলেছে । বিপিন ব্যস্ত হইয় তাহার প্রথম রোগী দেখিতে ছুটিল । যদিও হাবুর দিদিমা ডাক্তার fহসাবে তাহাকে আহবান করে নাই, সে যে ডাক্তারি বই পড়িয়া ভিতরে ভিতরে ডাক্তার হইয়া উঠিয়াছে, এ খবর কেহ রাখে না । বিপিন এবার যখন কাছারিতে আসে, আজ দিন কুড়ি আগের কথা, কামিনী সেই দিনই গিয়া বিপিনের সঙ্গে দেখা করিয়াছিল । তারপর দুপুরের পরে প্রায়ই বুড়ী কাছারিতে আসিয়া কিছুক্ষণ গল্পগুজব করিয়া চলিয়া ধাইত। তাহার অভ্যাসমত কয়দিন দুধ ও ফলমূলও নিজে লইয়া আসিয়াছে । আজ সাত আট দিন হইল কামিনী কাছারিতে আসে নাই, বিপিনের এখন মনে পড়িল । সে নিজেকে লইয়া এমন মশগুল যে, বুড়ী কেন আজকাল কাছারিতে আসিতেছে না–এ প্রশ্ন তাহার মনে উঠে নাই । গোয়ালাপাড়ার মধ্যেই কামিনীর বাড়ী । ছুইখানা বড় চালাঘর, মাটির দেওয়াল । খুব পরিষ্কার ক1রয়া লেপা-পোছ । এক দিকে গোহাল, আগে অনেকগুলি গরু ছিল । বিপিন ছেলেবেলায় কামিনীর বাড়ীতে আসিয়াছে, কামিনী কাছারি গিয়া তাহাকে সঙ্গে করিয়া বাড়ী আনিত এবং ওই বড় ঘরের দাওয়ায় বসাইয়া কত গল্প করিত, খাবার খাইতে দিত, সে কথা বিপিনের আজও মনে আছে। তবে সে কামিনীর বাড়ীতে আসে নাই আর কখনও সেই বাল্যদিনগুলির পরে, আসিবার अोक्क्ककe इम्न नहेि । কামিনী ধরের মেঝেতে বিছানার উপর গুইয়া আছে। বিছানাপত্রের অবস্থা দেখিয়া বিপিন বুঝিল, কামিনীর সচ্ছল দিন আর নাই। এক সময়ে এই ঘরের মধ্যে এক হাত পুরু গদির উপরে তোশক ও ধপধপে চাদর পাতা চওড়া বিছান। সে নিজের চোখে দেখিয়াছে । ঘরে নানা রকম ছবি টাঙানো থাকিত, এখনও অতীতের স্মৃতি বহন করিয়া দুইচারখানা ছবি ঝুল কালি মাখানে অবস্থায় দেওয়ালে ঝুলিতেছে—কালী, দশমহাবিদ্যা, মহারাণী ভিক্টোরিয়ার রঙিন ছবি, cशांईदिशद्र । কামিনী ময়লা কাখার ভিতর হইতে মুখ বাহির করিয়া ব্যস্তসমস্ত হইয়া বলিল, এস বাবা,