পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপিনের সংসার Woe O —ন, কিছু না, এমনি মনে পড়ে গেল। আপনাদের গায়ের দিকে এ নিয়ম আছে, না ? —শুনেছি বটে, বললাম তো । বলে বটে। তবে মেয়ের অযাত্রা এ কথা যে কেউ বলুক, আমি বিশ্বাস করি না। মেয়েরা অনেক উপকার করেছে আমার জীবনে। এই ধরো, আমি তোমায় দিয়েই বলি—কেমন চি ড়ের ফলার খাওয়ালে সেদিন—খেয়েদেয়ে নিন্দে করবো এমন মহাপাতকী আমি নই। বলিয়া বিপিন হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল। শাস্থি সলঙ্গ হাসিমুখে বলিল, আপনার ওই এক কথা। যান। —না, যাবো কেন, আমি অনেয্য কথা কি বলেছি বলে । তোমার যত্নের কথা যখন ভাবি শাস্তি, তখন—সত্যিই বলচি –আমন খাওয়ানো অন্ততঃ– —আচ্ছা, আচ্ছা থাক। আর আপনার ব্যাখ্যা করতে হবে না। আমি যাই, বৌদিদি একা রান্নাঘরে –গিয়ে ময়দা মাখবো— —একটা পান পাঠিয়ে দিও গিয়ে । পেয়ালাটা নিয়ে যাও । —না থাকুক। আপনার পান নিয়ে আসি, পেয়ালা নিয়ে যাবো । বিপিনের মনে একটি অদ্ভুত তৃপ্তি। এ ধরণের সেবা সে চায়—মানীই কেবল সে সাধ মিটাইয়াছিল কিছু দিন -আবার এই শাস্তি কোথা হইতে আসিয়া জুটিয়াছে। বেচারী মনোরমা এ ধরণটা জানে না । সেও সেবা করে, কিন্তু সে অন্তরকমের 1 তাহা পাইয়া এমন আনন্দ হয় না কেন ? দ্বাদশ পরিচ্ছেদ S সেদিন সকালে বিপিন রোদে পিঠ দিয়া বসিয়া ঔষধ বিক্রীর হিসাবের খাতা দেখিতেছে, এমন সময় শান্তি পিছন হইতে এক প্রকার চুপি চুপি আসিল—উদেশ্ব বোধ হয় বিপিনকে চমকাইয়া দেওয়া বা অপ্রত্যাশিত ভাবে তাহার সাহচর্ঘ্যের আনন্দ দান করা। উদ্দেশু খুব স্বম্পই না হইলেও সে এমনি প্রায়ই করে আজকাল। বিপিনও শাস্তির সঙ্গে মিলিতে মিশিতে পূৰ্ব্বের মত সঙ্কোচ বা জড়তা অনুভব করে না । সামনে ছায়া পড়িতেই বিপিন পিছন ফিরিয়া চহিয়া দেখ্রিল শাস্তি হাসিমুখে দাড়াইয়া। বিপিন কিছু বলিবার পূর্বে শান্তি বলিল—কি করচেন ? বিপিন বলিল—এসো শাম্ভি, হিসেব দেখচি— — একটা কথা বলতে এলাম, কাল চলে যাচ্চি এখান থেকে— বিপিন আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল—কোথায় ? কোথায় যাবে!