পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২২ বিভূতি-রচনাবলী সময় শাস্তিকে তৈরী থাকিতে বলিয়া গেল। গাড়ে পাচটার সময় ফিরিয়া দেখিল, শাস্তি সাজিয়া গুজিয়া অধীর আগ্রহে ঘর-বাহির করিতেছে। বলিল—উ:, বাপরে, বেলা কি আর আছে। টকি শেষ হয়ে গেল এতক্ষণ। চলুন, শীগগির। বিপিন বলিল-গাড়ী আনবে, না হেঁটে যেতে পারবে ? মিত্তির মশাই কি বলেন? শাস্তির শ্বশুর বলিলেন-আপনিও যেমন, কে-ই বা ওকে চিনচে এখানে, হেঁটেই ৰাক না । পথে বাহির হইয়াই শাস্তি বলিল—উ, পায়ে বড্ড কাকর ফুটচে, খালি পারে এ পথে ईछे थांञ्च न । অগত্যা বিপিন একখানা গাড়ী করিল। শাস্তি বলিল-বাবাকে বলবেন না গাড়ীর কথা, আমি পয়সা দিচ্চি, আমার কাছে আলাদা পয়সা আছে । বিপিন হাসিয়া বলিল—তোমার সব দুষ্ট মি শাস্তি, আমি সব বুঝি। তোমার ঘোড়ার গাড়ী , চড়বার সাধ হয়েছিল কিনা বল সত্যি করে । কাকর ফোটা কিছু না, বাজে ছল। ধরে ফেলেচি, না ? শাস্তি হাসিয়া ফেলিল । — পয়সা তোমায় দিতে হবে—একখা ভাবলে কেন ? —আপনি জিতে যাবেন কেন ? আমার সাধ হয়েছিল, আপনার L৩া হয় নি ? —যদি বলি আমারও হয়েছিল ? —বেশ তবে দিন আপনি । টকি দেখিতে বসিয়া শাস্তি বলিল-আচ্ছা বলুন তো আপনার সঙ্গে বসে এমনভাবে টকি দেখবো একথা কখনো ভেবেছিলেন ? —কি করে ভাববো বলে ? —আপনি খুশি হয়েচেন বলুন। বিপিন প্রখম হইতেই নিজেকে অত্যন্ত সতর্ক করিয়া দিয়াছিল মনে মনে । শাস্তিকে এক লইয়া বাড়ীর বাহির হইয়াছে—তাহার সঙ্গে কোনোপ্রকার ভালবাসার কথা বলা হইবে না। ও পথে আর নয় । বিশেষতঃ তাহার স্বামী ও শ্বশুর বিশ্বাস করিয়া তাহার সঙ্গে ছাড়িয়া দিয়াছে যখন, তখন শাস্তিকে একটিও অন্ত ধরনের কথা সে বলিবে না। বিপিন জবাব দিতে পারিত—কেন, আমি খুশি হই ন হই তোমার তাতে জালে যায় কিছু নাকি ? কিন্তু সে বলিল—খুশি না হবার কারণ কি ? আমিও যে ঘন ঘন টকি দেখি তা তো নয়, থাকি তো সোনাতনপুরে। খুশি হবার কথাই তো। আর এই যে পালাটা হচ্ছে নতুন পালা একেবারে । কথাটা জন্য দিক দিয়া ঘুরিয়া গেল । বিপিন দেখিল শাস্তি খুৰ বুদ্ধিমতী মেয়ে। টকি কখনও না দেখিলেও লে গল্পের গতি