পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WOOo विफूडि-ब्रध्नांवर्जौ শাস্তি আবার বলিল-যাবেন নিয়ে ? চলুন না ওদের বাড়ীম্বর দেখে আসি—কখনো তো কিছু দেখিনি—থাকি পাড়াগায়ে পড়ে । তা হয় না শাস্তি, কে কি মনে করবে, বুঝলে না? আর তুমি চলে গেলে তোমার শ্বস্তর কি করবেন ? g —একদিনের জন্যে ও চালিয়ে নিতে পারবে এখন। ও সব কাজে মজবুত, আপনার মত অকেজো নয় তো কেউ ! —তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু কে কি ভাবতে পারে –গেলে গোপালকেও নিয়ে যেতে হয়। তা তো সম্ভব হচ্ছে না, বুঝলে না ? শাস্তি নিরুত্তর রহিল— কিন্তু বোঝা গেল সে মনঃক্ষুণ্ণ হইয়াছে। বেলা তিনটার সময় শাস্তির স্বামী ও শ্বশুরকে বলিয়া কহিয়া দুদিনের ছুটি লইয়া সে পলাশপুর রওনা হইল। যাইবার সময় শান্তি পান সাজিয়া একখানা ভিজা নেকড়ায় জড়াইয়া হাতে দিয়া বলিল—বড্ড রোদপুর, জলতেষ্ট পেলে মাঠের মধ্যে পান খাবেন। পরশু ঠিক চলে আসবেন কিন্তু। বাবা কখন কেমন থাকেন, আপনি না এলে মহা ভাবনায় পড়ে যাবো আমরা । স্টেশনের পাশে সেগুন বাগান ছাড়াইয়া সোজা মেটে রাস্ত উত্তরমুখে মাঠের মধ্য দিয়া চলিয়াছে। এখনও রৌদ্রের খুব তেজ, যদিও বেলা চারটা বাজিতে চলিল। এই পথ বাহিয়া আজ পাঁচ বছর পূর্বে বিপিন ধোপাখালির কাছারি বা মানীদের বাড়ী হইতে কতবার কাগজপত্র লইয়া রাণাঘাটে উকীলের বাড়ী মোকৰ্দমা করিতে আসিয়াছে, এই পথের প্রতিটি বৃক্ষলতা তাহার স্বপরিচিত—শুধু স্বপরিচিত নয়, সেই সময়কার কত স্থতি, মানীর কত হাসির ভঙ্গি, কত অাদরের কথা ইহাদের সঙ্গে জড়ানো । কত কত! সে সব কথা আজ ভাবিয়া লাভ কি ? বেলা পাচটার সময় কলাধরপুরের বিশ্বাসদের বাড়ীর সামনে আসিতেই পথে হঠাৎ বিশ্বাসের বড় ছেলে মোহিতের সঙ্গে দেখা । মোহিত আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল—একি, নায়ের মশায় যে ! এতদিন কোথায় ছিলেন ? চলেচেন কোথায় । পলাশপুরেই ? ও, তা আবার কি ওদের স্টেটে—অনাদিবাবু তো মারা গিয়েচেন— বিপিন সংক্ষেপে বলিল, স্টেটে চাকুরী করিবার জন্য নয়, অনাদিবাবুর প্রাদ্ধে নিমন্বিত হইয়াই সে পলাশপুর যাইতেছে—বর্তমানে সে ডাক্তারি করে। মোহিত ছাড়ে না, বেলা পডিয়াছে, একট, কিছু খাইয়া তবে যাইতে হইবে, পূৰ্ব্বে রাণাঘাট হইতে যাতায়াতের পথে তাহাদের বাড়ীতে বিপিনের কত পায়ের ধুলা পডিত -ইত্যাদি। অগত্যা কিছুক্ষণ বসিতে হইল। কতকাল পরে আবার পলাশপুরের বাড়ীতে মানীর সঙ্গে দেখা হইবে । সেই বাহিরের ঘর, সেই দালান, সেই দালানের জানালাটি, যেখানটিতে মানী তাহার সহিত কথা বলিবার জন্য দাড়াইয়া থাকিত !