পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৩৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిetS বিভূতি-রচনাবলী মহল হইয়া পড়িয়া খাকিত । প্রতুলের খণ্ডয় একদিন প্রস্তাব করিলেন—সে অফিসে পরের চাকুরী না করিয়া যদি কলিয়ারিগুলির তত্ত্বাবধান করে, তবে অকিসে যে বেতন পাইতেছে তাহা তো পাইবেই, উপরন্তু ভবিষ্যতে একটা উন্নতির আশা থাকে শ্বশুর-জামাই উভয়েরই। প্রতুল শ্বশুরের প্রস্তাবে স্বাজী হইল।. আরও বছর দুই পরে কলিয়ারির অবস্থা সত্যই ফিরিল প্রতুলের কর্মদক্ষতায় । প্রতুল আসানসোলের রেল স্টেশন হইতে তিন মাইল দূরে বুদ্ধচক্ৰ কলিয়ারিতে সাজানো বাংলাভে স্ত্রীপুত্র (ইতিমধ্যে তাহার একটি ছেলে হইয়াছিল) লইয়া বাস করে—একটু স্টাইলের উপরই থাকে, না থাকিলে চলে না, কাজের খাতিরেই থাকিতে হয় নাকি । কি জানি কেন এখানে আসিয়া কণার কথা তাহার বড়ই মনে পড়িতে লাগিল। আজ তাহার এই সাজানো বাংলো, স্থখ ঐশ্বৰ্য্য—ইহাদের ভাগ কণা কিছুই পাইল না। সেই স্বয়ূর পাড়াগায়ে দারিদ্র্য ও নিরাশার অন্ধকারের মধ্যে ভাঙ্গা পুরোনো ইটের পুরোনো কোঠাবাড়ী আঁকড়াইয়া পড়িয়া রহিল ! প্রতুলের মনটা যেন হা হা করিয়া ওঠে। সে বুঝিল, এখনও কণার কথা তাহার মন জুড়িয়া বসিয়া আছে, তাই তাহাকে ভুলিয়া যাওয়া প্রতুলের পক্ষে সহজ নয়। প্রতুলের স্ত্রী বড়লোকের মেয়ে, ৰাল্যকাল হইতে সে অখ ভোগ করিয়া আসিতেছে, তাহাকে খাওয়াইয়া পরাইয়া নতুন জিনিস দেখাইয়া লাভ কি ? তেলা মাথায় তেল দেওয়া। বরং ষে চিরবঞ্চিভ। - জীবন যাহাকে কিছু দেয় নাই—তাহাকে যদি আজ সে–কেন এমন হয় জীবনে কে ৰলিৰে ? যে পাইয়া আসিতেছে সে-ই বরাবর পায়, যে পায় না সে কখনই পায় না। ঘাহাকে খাওয়াইয়া সুখ পরাইয়া স্বখ, দেখিয়া দেখাইয়া স্থখ—তাহাকে খাওয়ামো যায় না, পরানো যায় না, দেখানোও যায় না। কেন এমন হয় ? এ সব চার পাঁচ বছর আগের কথা । জাজ কয়েক দিন হইল প্রতুল কলিকাতায় আসিয়াছে চাকুরীর খোজে। কলিয়ারি আছে কিন্তু প্রতুলের স্ত্রী নাই। পুনমূৰ্ষিকের পর্য্যায়ে আসিয়া দাড়াইবার ইতিহাস আছে! সংক্ষেপে এই যে, গত বৎসর স্ত্রীর মৃত্যুর পর হইতেই শ্বশুরের কলিয়ারিতে থাকা প্রতুলের ভাল মনে হইল না এবং তার পরে দেখা গেল প্রতুলের শ্বশুরেরও তাহা ক্রমশঃ ভাল বলিয়া মনে হইতেছে না। স্বতরাং জাজ কয়েকদিন হইল প্রতুল তাহার ছেলেটিকে সঙ্গে লইয়া কলিকাতায় আসিয়া এই পরিচিত মেসটিতে উঠিয়াছে এবং চাকুরীর সদ্ধানে আছে। এই সেই শশধর । কণার ভাই। এতকাল পরে হঠাৎ এভাবে কোথা হইতে কেমন করিয়া আসিয়া পড়িল। কিছুক্ষণ বসিয়া শশধর চা খাইয়া স্বম্ব হইবার পরে প্রতুল বলিল,