পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৪৮ বিভূতি-রচনাবলী কৃতাৰ্থ করিয়া দিয়া গিয়াছে । টেপি বলিল—বাবা, নরেনাদাকে আমি নেমস্তন্ন করেছি। নরেন-দা বলেছে আমাকে মাংস রোধে খাওয়াতে হবে । তুমি মাংস এনে দাও হাজারি এদিকের সব কাজ মিটাইয়া কুমের বাড়ী যাইবার জন্য রওনা হইল, পথে হঠাৎ পদ্মঝিয়ের সঙ্গে দেখা। পদ্মঝিয়ের পরনে মলিন বস্ত্র। কখনও হাজারি জীবনে স্বাহা দেখে নাই । হাজারি বলিল—হাতে কি পদ্মদিদি ? যাচ্ছ কোথায় ? পদ্ম হাজারিকে দেখিয়া দাড়াইল, বলিল--ঠাকুরমশায়, কবে ফিরলে ? হাতে তেঁতুল, একটু নিয়ে এলাম হোটেল থেকে। হাজারি মনে মনে হাসিল । হোটেল হইতে লুকাইয়া জিনিস সরাইবার অভ্যাস এখনও যায় নাই পদ্মদিদির ! হাজারি পাশ কাটাইয়া চলিয়া যাইবার চেষ্টা করিল, কিন্তু পদ্ম বলিল-শোনো, দাড়াও না ঠাকুরমশায়! কাল তোমাদের বাসায় গিয়েছিলাম যে ! বলে নি বৌদিদি ? —হঁ্যা হ্যা বলছিল বটে। —বৌদিদি লোক বড় ভাল, আমার সঙ্গে কত গল্প করলে । আর একদিন যাব । —ব, যাবে বৈ কি পদ্মদিদি, তোমাদেরই বাড়ী । ধখন ইচ্ছে হয় যাবে। হোটেল কেমন চলছে ? —ত মন্দ চলছে না । এককরম চলছে । — বেশ বেশ । তাহলে এখন আসি পদ্মদি দি— হাজারি চলিয়া গেল। ভাবিল—একরকম চলছে বললে অথচ কাল বাড়ীতে বসে গল্প করে এসেছে হোটেল আর চলে না, উঠে যাবে। পদ্মদিদি ভাঙে তো মচকায় না! কুস্কমের বাড়ীতে হাজার অনেকক্ষণ কথাবার্তা বলিল। কথায়-কথায় নতুন গায়ের বধুটির কথা মনে পড়াতে হাজার বলিল—তাল কথা কুসুম মা চেনো ? এড়োশোলার বনমালীর স্ত্রীর ভাইঝি—তোমাকে দিদি বলে ডাকে একটি মেয়ে, বিয়ে হয়েছে নতুন গা ? কুস্কম বলিল—খুব চিনি। ওর নাম তো স্ববাসিনী । ওকে বি ক’রে জানলেন জ্যাঠী মশায় ? হাজারি বধুটির সম্বন্ধে সব কথা খুলিয়া বলিল, তাহার টাকা লইয়া আসা, হোটেলে তাহাকে অংশীদার করার সঙ্কল্প । কুহম বলিল—এ তো বড় খুশির কথা । আপনার হোটেলে টাকা খাটলে ওর ভবিষ্যতে একটা হিল্পে হয়ে রইল । —কিন্তু যদি আজ মরে যাই মা ? তখন কোথায় থাকবে হোটেল ? —ও কথা বলতে নেই জ্যাঠামশায়—ছি:–