পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y6 o বিভূতি-রচনাবলী যাওয়া-আসা, একজন চাকর ওরা দেবে। বম্বেতে ফ্রি কোয়ার্টার দেবে। যদি ওদের নাম দাড়িয়ে যায় আপনার রান্নার গুণে আপনাকে একটা অংশও ওই দেবে। আপনি ब्रांछौ ? হাজারি নরেনকে ভাকিয়া আলোচনা করিল জাড়ালে। মন্দ কি ? কাজকৰ্ম্ম এদিকে স্বাহ রহিল নরেন দেখাশুনা করিতে পারে । খরচা বাদে মাসে অতিরিক্ত দেড় শত টাকল কম নয়—তা ছাড়া হোটেলের ব্যবসা সম্বন্ধে খুব একটা অভিজ্ঞতা লাভের স্বৰোগ এটি । এ হাতছাড়া করা উচিত হয় না—নরেনের ইহাই মত । হাজারি আসিয়া বলিল—আমি রাজী আছি। কবে যেতে হবে বলুন। কিন্তু একটা কথা আছে--হিন্দী তো আমি তত জানিনে । কাজ চালাব কি করে ? বাঙালী বাবু বলিলেন-সেজন্তে তাবনা নেই। ছুদিন থাকলেই হিন্দী শিখে নেবেন। সই করুন এ কাগজে ৷ এই আপনার কন্টাক্ট ফৰ্ম্ম, এই এ্যাপয়েণ্টমেন্ট লেটার । দুজন সাক্ষী ডাকুন। বদ্ধ বাড়ুৰ্য্যেকে ডাকিয়া আনা হইল তাহার হোটেল হইতে, অন্য সাক্ষী নরেন। কাগজপত্রের হাঙ্গামা চুকিয় গেলে উহার চা-পানে জাপায়িত হইয়া ট্রেনে উঠিল। বাঙালী ভদ্রলোক বলিয়া গেল—মে মাসের পয়লা জয়েন করতে হবে আপনাকে বম্বেতে। আপনার ইন্টার ক্লাস রেলওয়ে পাল আসছে আর আমাদের লোকে আপনাকে সঙ্গে করে বন্ধে পৌঁছে দেবে। তৈরী থাকবেন–জার পনেরে দিন বাকী । হাজারি স্টেশন হইতে বাহির হইয়াই কুমুমের সঙ্গে একবার দেখা করিবে তাবিল। এত বড় কথাটা কুস্বমকে বলিতেই হুইবে আগে । বোম্বাই! সে বোম্বাই যাইতেছে! দেড়শো টাক মাহিনায় ! বিশ্বাস হয় না। সব যেন স্বপ্নের মত ঘটিয়া গেল। টাকার জন্ত নয় । টাকা এখানে সে মাসে দেড়শো টাকার বেশী ছাড়া কম রোজগার করে না। কিন্তু মানুষের জীবনে টাকাটাই কি সব ? পাচটা দেশ দেখিয়া বেড়ানো, পাঁচজনের কাছে মান-খাতির পাওয়া, নূতনতর জীবনধাত্রার আস্বাঙ্গ—এ সবই তো আসল। পিছন হইতে বদ্ধ বাড়ধ্যে ডাকিল—ও হাজারি-ভায়, হাজারি-ভায় শোন, হাজারি ভায়া হাজারি কাছে বাইতেই বন্ধু বাড়ুষ্যে—রাণাঘাটের হোটেলের মালিকদের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা সম্বাস্ত ব্যক্তি ষে—সেই ঘদ্ধ বাড়ধ্যে স্বয়ং নীচু হইয়া হাজারির পায়ের খুলে লুইতে গেল। বলিল—ধঙ্কি, খুব দেখালে ভায়া, হোটেল করে তোমার মত ভাগ্যি কারে ফেরে নি। পায়ের খুলে দাও, তুমি সাধারণ লোক নও দেখছি— হাজারি ই-ই করিয়া উঠিল । —কি করেন বঁাড় ষ্যেমশায়—আমার দাদার সমান আপনি—ওকি-ওকি—আপনাদের বাপমায়ের আশীৰ্ব্বাদে, আপনাদের আশীৰ্ব্বাদে—একরকম করে খাচ্ছি—