পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 বিভূতি-রচনাবলী —খদের তো বটেই। পয়সা দিয়ে খাৰে । এম্‌নি না। আমার ভাইপো আসবে দেশ থেকে এই শান্তিপুরের গাড়ীতে । —ন!—না—তাকে পয়সা দিতে হবে না। সে ছেলেমান্থব, দু-এক দিনের জন্তে আসবে—তার কাছ থেকে পয়সা কিসের ? দইয়ের পয়সা নিয়ে যা— বেচু একথা কখনো কাহাকেও বলে না, কিন্তু পদ্ম বিয়ের সম্বন্ধে অন্ত কথা। পঙ্ক কি এ হোটেলে যা বলে তাই হয়। তাহার উপর কথা বলিবার কেহ নাই। সেজন্ত দুষ্ট লোকে নানারকম মন্দ কথা বলে । কিন্তু সে-সব কথায় কান দিতে গেলে চলে না। শাস্তিপুরের গাড়ী আসিবার শব্দ পাওয়া গেল। হোটেলের চাকর খদের আনিতে স্টেশনে ঘাইতেছিল, বেচু চক্কত্তি বলিল—খদের বেশী ক’রে আনতে না পারলে আর তোমায় রাখা হবে না মনে রেথো—আমার খরচ না পোষালে মিথ্যে চাকর রাখতে যাই কেন ? গেল হুপ্তাতে তুমি মোটে তেইশটা খদ্ধের এনেছ—তাতে হোটেল চলে ? পদ্ম ঝি বলিল—তোমায় পই-পই ক’রে বলে হার মেনে গেলাম ; তিন আনা বাড়িয়ে চোদ পয়সা করে, আর ফাস্টে কেলাস-টেলাস তুলে দ্যাও । ক’টা খন্ধের হয় ফাস্টে কেলাসে ? বদ্ধ বাড়ুয্যের হোটেলে রেটু কমিয়েছে—শুনে— বেচু বলিল—চুপ চুপ, একটু আস্তে আস্তে বল না। কারও কানে কথা গেলে এখুনি— এমন সময় ছ’জন খদের সঙ্গে করিয়া মতি চাকর ফিরিয়া আসিল । বেচু বলিল—আক্ষন বাৰু, পুটুলি এখানে রাখুন। কোন কেলাসে খাবেন বাবুর ? পাচ আনা আর তিন আনা— একজন বালল—তোমার সেই বামুন ঠাকুরটি আছে তো ? তার হাতের রান্না খেতেই এলাম। আমরা সে-বার খেয়ে গিয়ে আর ভুলতে পারি নে। মাংস হবে ? —না বাবু, মাংস তো রান্না নেই—তবে যদি অর্ডার দেন তো ওবেলা— লোকটি বলিল—আমরা মোকদমা করতে এসেছি কিনা, যদি জিতি পোড়ামা আর সিদ্ধেশ্বরীর ইচ্ছেয়—তবে হোটেলে আমাদের আজ থাকতেই হবে। কাল উকীলের বাড়ী কাজ আছে—তা হ’লে আজ ওবেলা তিনসের মাংস চাই—কিন্তু সেই বামুন ঠাকুরকে দিয়ে স্বাক্ষা করানো চাই। নইলে আমরা অস্ত জায়গায় যাব । ইহার টিকিট কিনিয়া খাইবার ঘরে ঢুকিলে পদ্ম কি বলিল—পোড়ারমুখে মিনসে আবার গুনতে না পায় । কি যে ওর রান্নার স্বখ্যাত করে লোকে, তা বলতে পারি নে—কি এমন মরণ রামার ! বেচু বলিল—টিকিটগুলো নিয়ে আয় তো ভেতর থেকে । এ-বেলার হিসেবটা মিটিয়ে এাখি । আর এখন তো গাড়ী নেই—আবার সেই একটায় মুড়োগাছা লোকাল— পদ্ম বলিল—কেন আসাম মেল— —আসাম মেলে আর তেমন খদের আসছে কই ? আগে আগে আসাম মেলে আটটা