পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অম্নবৰ্ত্তন অবনী চলিয়া গেল। যদুবাৰু স্কুলের বাহিরে আসিলেন ভাবিতে ভাবিতে ক্ষেত্রবার পিছন হইতে আসিয়া বলিলেন, চল হে যদুদা, একটু চা খাই সবাই মিলে। —আর চা খাব কী, মন বড় খারাপ। —কী হল ? তুমি তবুও কুড়ি টাকা পেলে। আমাদের তো এক পয়সাও না। • —ম হে, তোমার বউদিদি রয়েছে বেড়াবাড়ী—সেই পুড়াগ। তাকে এবার না আনলেই নয়। কিন্তু এনে কোথায় বা রাখি ? —এখন না-ই বা আনলে দাদা। নিজের বাড়ীতেই তে রয়েছেন। থাকুন না। এখন পূজোর সময়, দেশে পূজো দেখুন না। গায়ে পূজো হয় তো ? যদুবাবু গর্বের সহিত বলিলেন, আমার বাড়ীতেই পূজো। শরিকী পূজো । আর, বেড়াবাড়ীর জমিদার তো আমরা। মস্ত বাড়ী, আমার অংশেই এখনও ( যদুবাবু মনে মনে গণনা করিলেন) পাঁচখানা ঘব, ওপর নীচে। বাড়ীতেই পুকুর, বাধা ঘাট। আমার স্ত্রী সেখানেই রয়েছে, আসতে চায় না, বলে--বেশ আছি। হয়েছে কী ভায়া, নামে তালপুকুর, ঘটি ডোবে না। অাছে সবই, এখনও দেশে গেলে লোকজন ছুটে দেখা করতে আসে, বলে— বড়বাবু বিদেশে পড়ে থাকেন কেন ? দেশে আস্বন, আপনার ভাবন কী ? কিন্তু ম্যালেরিয়া বড়। তেমন আয়ও নেই পুরনো আমলের মত। নামটাই আছে। নইলে কি আর বত্রিশ টাক সাত আনায় পড়ে থাকি এই স্কুলে, রামোঃ ! যদুবাবু ওয়েলেসলি স্কোয়ারের বেঞ্চিতে বসিয়া মনে মনে বহু আলোচনা করিলেন। হীকে এখন কলিকাতায় আনা অসম্ভব। কুড়ি টাকা মাত্র সম্বলে বাসা করিয়া এক মাসও চালাইতে পারিবেন না। বেড়াবাড়ী এখন গেলে অবনী দস্তুরমত অপমান করিবে তাহাকে। সুতরাং তিনি কলিকাতায় মেসেই থাকিবেন, স্বী কাদাকাটা করিলে কী হইবে ? যদুবাবুর স্ত্রী পূজার মধ্যে স্বামীকে পাঁচ-ছয়খানা লম্বা লম্বা পত্র লিখিল । সে সেখানে টিকিতে পারিতেছে না, অবনীর দিদির ও স্ত্রীর খোটা এবং দুৰ্ব্ব্যবহারে তাহাব জীবন অতিষ্ঠ হইয়া উঠিয়াছে, সেখানে আর থাকিতে হইলে সে গলায় দুড়ি দিব, हेउ7ा ि। যদুবাৰু লিখিলেন, তিনি এখন রামপুরহাটের জমিদারের বাড়ীতে টুইশানি পাইয়াছেন, ছুটি লইয়া এখন দেশে যাইবার কোনও উপায় নাই। তাহারা তাহাকে বড় ভালবালে, ছাড়িতে চায় না । সৰ্ব্বৈব মিথ্যা। স্কুলে ঢুকিবার পূৰ্ব্বে গেটের কাছে একদল ছাত্র ভিড় জমাইয়া তুলিয়াছে। ধন্থবাৰুকে দেখিয়া ক্লাস নাইনের একটি বড় ছেলে আগাইয়া আসিয়া বলিল, আজ স্কুলে ঢুকবেন না স্যার, আজ আমাদের স্ট্রাইক, কেউ যাবে না স্কুলে । - যদুবাবুর মুখ অপ্রত্যাশিত আনলে উজ্জল দেখাইল। এও কি সম্ভব হইবে ? আজ কাহার