পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অল্পবৰ্ত্তন

মুখে, তfর তো নয় ? ক্ষেত্রবাবুও একটু আশ্চৰ্য্য হইয়াছেন। বলিলেন, তাই তো ! কিছু বুঝতেও পারলাম না তার। —যত শুনেছিলে তোমরা, আমার মনে হয় অতখানি সত্যি নয়। মিঃ আলম আত খারাপ মানুষ নয়। —স্তার, আমাকে মাপ করবেন, আপনি অবিপ্তি মি: আলমকে সন্দেহ করেন না, সে খুব ভাল কথা। তবে আমার স্বচক্ষে দেখা এবং স্বকৰ্ণে শোন। স্তার, । —যাক, সব ভাল যার শেষ ভাল। নারাণবাবুর কথাই খাটল। বলেছিল, অপর পক্ষের চেষ্টা ব্যর্থ হবে । কমিটীর মেম্বরদের মধ্যে অনেকেই এই মীটিংয়ের পরে আলমের উপর চটিয়া গেলেন। ফলে এক মাসের মধ্যে মি: আলমের মাহিনা আরও কাটিবার প্রস্তাব উত্থাপিত হইল। কমিটীতে এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার কোন বাধা ছিল না, কিন্তু সাহেব এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যথেষ্ট আপত্তি করিলেন । - সেদিন সন্ধ্যায় মীটিংয়ের পরে ক্ষেত্রবাবু হেডমাস্টারের ঘরে ঢুকিলেন। সাহেব বলিলেন, বন্ধন, ক্ষেত্রবাৰু। কী খবর ? —আর স্যার, আপনি মি: আলমের পক্ষে অতটা না দাড়ালেও পারতেন। —কেন বল তো ? —আপনার খুব বন্ধু নয় ও । সাহেব হাসিয়া বলিলেন, ও ! তা বলে আমি কি তার প্রতিশোধ নেব ওভাবে । ওসব কাজ আমাদের দ্বারা হবে না। আমরা শিক্ষক-আমি চাই না ক্ষেত্রবাৰু যে, স্কুলের মধ্যে এ ধরনের দলাদলি হয় । আমি চেয়েছিলাম স্কুলটাকে ভাল করতে । অক্সফোর্ড থেকে অনেক কিছু শিখে এসেছিলাম, নতুন প্রণালীতে শিক্ষা দেব ছেলেদের । এখানে এসে সব মিথ্যে হতে চলেছে দেখছি। এখানকার হাওয়াতে দলাদলি ভাসে। এই সব ঘটনার পর কিছুদিন দলাদলি ও ষড়যন্ত্র ক্ষান্ত রহিল। আবার মাস দুই পরে মি: আলম নতুন ভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করিল। এবার মেমসাহেরের বিরুদ্ধে। স্কুলে অত টাকা খরচ করিয়া মেম রাখিবার কোন কারণ নাই। বিশেষত ছেলের স্কুলে মেয়েমানুষ শিক্ষয়িত্রী কেন? এবার মি: আলমের ষড়যন্ত্র সফল হইল। স্বদেশী মেম্বরের দল টেবিল চাপড়াইয়া লম্বা বক্তৃত৷ করিল। ফলে মিস সিবসনের চাকরি গেল। ছেলেরা মিলিয়া চাদ তুলিয়া মেমসাহেবের বিদায়-অভিনন্দনঙ্গাপক সভা করিলু। মিস, লিবসন ছোট ছোট ছেলেদের সত্যই ভালবাসিত, বিদায়-সভায় বেচারী প্রতিভাষণ দিতে উঠিয়া কাদিয়া ফেলিল । মেমসাহেব চলিয়া যাওয়াতে সাহেবের কষ্ট হইল খুব বেশী। সকলে বলে, বিলাত হইতে আলিবার সময় সাহেব মিল সিবসনকে সঙ্গে করিয়া আনেন, গরীবের ঘরের মেয়ে, ইণ্ডিয়ায় একটি চাকরি জুটিয়া যাইবে--ইহাই ছিল উদেপ্ত। -