পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অম্নবৰ্ত্তন —গত মাসের মাইনের মধ্যে দশটি টাকা আজ পাওয়া গেল, এতে তুমি কত ষি খাবে, আর কী করবে ? অনিলা দুঃখ ও রাগের স্বরে বলিল, আমি কি তোমার খি খাই! ছেলেমেয়ের মুড়ি চিৰুতে পারে না রোজ, তাও কোনদিন ওদের জন্যে একটু হালুয়া, কি দুখানা পরোটা— ক্ষেত্রবাবু ঝাঝের সঙ্গে বলিলেন, না, কেন মুড়ি খেতে পারবে না ? বিদ্যাসাগর মশায় যে না খেয়ে পরের বাসায় থেকে লেখাপড়া শিখেছিলেন । তবে ওসব হয়। যখন যেমন অবস্থা, তখন তেমনি থাকবে । - —আধ সের ঘি তুমি বরাদ করেছ কি না মাসে, আমি তাই শুনতে চাই। —করেছিলাম। এ মাস পেকে হয়তো খরচ কমাতে হবে। পাচ্ছি কোথায় { ধির আইটেমই হয়তো তুলে দিতে হবে। অনিলা সামনে গালে হাত দিয়া বলিয়া পড়িয়া বলিল, হ্যা গা, সেই সাড়ে নটায় থেয়ে বেরোও আর সাড়ে পাঁচটায় ফেরে। যদি কিছু না হয় ওতে, তবে ও ছাইপাশ চাকরি কেন ছেড়ে দাও না । —ছেড়ে তো দেব, তার পর ? —ছেলে পড়াও যেমন পড়াচ্ছ —তাতে হয় না ? অার নয়তো চল বাধার কাছে । ওদিকে অনেক কিছু জুটে যাবে। ডিহিরি-অন-সোনে আমার সেই শৈলেনকাকা থাকেন, দেখেছ তো তাকে ? এক মাড়োয়ারীর ফার্মে কাজ করেন । ধরে পেড়ে বললে— সেখানে চাকরি হতে পাবে। যদি বল তো বাবাকে লিখি । —ত না হয় হল । কলকাতা ছেড়ে কোথাও যেতে মন সরে না। এতদিন এখানে আছি –আর কি জান, স্কুলের ওপরও বড় মায় । আমার বলে নয়, সব মাস্টারেরই। মুখে দুঃখে আজ বারে। ষোলো বিশ বছর এক জায়গায় আছি। ওই কেমন একটা নেশা— স্থলবাড়ীটা, ছেলেগুলো, এই চায়ের দোকানের মজলিসটা হেডমাস্টার-বেশ লাগে। যত কষ্টই পাই তবুও যেতে পারি নে পোথাও যে, তাই এক এক সময় ভাবি– —ভাবাভাবির কোনও দরকার নেই, চল বেরুই । কলকাতার খরচ বেশী অথচ খাওয়া হচ্ছে কী, একটু দুধ তোমার পেটে পড়ে না, একটু ম্বি না। আমাদের গয়ায় এগারো সের করে খাটি দুধ —বুঝি সবই। কিন্তু কোথাও গিয়ে থাকতে পারি নে যে। তোমাদের গয়া কেন, আমার নিজের পৈতৃক গ্রামে চোদ্ধ সের করে দুধ টাকায়। পাচ সিকে উৎকৃষ্ট গাওয়া দ্বিয়ের সেরকিন্তু সেবার তোমার দিদি থাকতে নিয়ে গেলুম-মন টেকে না মোটে। ছেলেমেয়েদের মন মোটে টেকে না-সব কলকাতায় মানুষ। তোমার দিদি তে। ছটফট করতে লাগল দেশে। তা ছাড়া ম্যালেরিয়াও আছে— এই সময় বাহির হইতে কে ডাকিল, ক্ষেত্রবাৰু আছেন ? —কে ডাকচে দেখ তো জানলা দিয়ে } *