পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বহুবাৰু বিরক্তির স্বরে বলিলেন, তোমাদের কেবল পয়লা আর পয়সা, একটা লোক শুবছে বিছানায়—জানি নে ও-সব, যাও এখান থেকে— ধন্থৰাবুর ীির আর কোন গহনাপত্র নাই, স্বামী বিশেষ কিছু দেন নাই, বরং বাপের বাড়ী হইতে আনীত যাহা কিছু ধুলাগুড়ে ছিল, তাহাও স্বামী ফুকিয়া দিয়াছেন অনেকদিন পূৰ্ব্বে । এখন উপায় ? ভাবিয়া-চিন্তিয়া বিবাহের সময় শ্বশুরের দেওয়া বেনারসী শাড়িখানা লুকাইয়া গ্রামের মধ্যে অবস্থাপন্ন রায়বাড়ীর গিীর কাছে লইয়া গেল। রায়-বাড়ীর গিল্পী বলিলেন, এস এস ভাই। কবে এলে ? শুনলাম নাকি ঠাকুরপোর বড় অস্বথ ? - যন্ধুবাবুর স্বী কাদিয়া বলিল, সেই জন্যেই আসা। কলকাতার স্কুল উঠে গিয়েছে, হাতে এক পয়সা নেই, অথচ ওঁর অম্বখ। আমার এই ফুলশয্যের বেনারসীখানা বিক্রি করে দিন। নইলে উপায় নেই। এই দেখুন ভাল কাপড়, এখনও নষ্ট হয় নি—এক জায়গায় কেবল একটু পোকায় কেটেচে— রায়গিল্পীর অবস্থা ভাল ! দুই ছেলে চাকুরি করে, জমিজমাও আছে। বাড়ীর কর্তা আগে কোর্টের নাজির ছিলেন সে কালের নাজির, দুই পয়সা উপার্জন করিয়াছিলেন। একটি মেয়ে বিধবা, বাপের বাড়ী থাকে, কিন্তু তাহার শ্বশুরবাড়ীর অবস্থা ভালই—ীিধন হিসাবে কিছু কোম্পানির কাগজও আছে। রায়গিনী বলিলেন, ফুলশয্যের বেনারসী কেন বিক্রী করবে ভাই । ঘু-পাচ টাকা দরকার থাকে, নিয়ে স্বাও । আবার যখন তোমার হাতে আসবে দিয়ে যেয়ো। যদুবাৰুর গ্ৰী বলিল, না, আপনি একেবারে বিক্রি করিয়েই দিন। ধার করলে একদিন শোধ দিতে হবে, তখন কোথায় পাব ? স্ত্রীর মুখে এ কথা শুনিয়া যন্থবাৰু চটিয়া গেলেন। বলিলেন, ধার দিতে চাচ্ছিল, মিলেই হত। কাপড়খানা থাকত, টাকাও চার-পাচটা আসত। কাপড়খানা ঘুচিয়ে দিয়ে এলে ? এমন পাথুরে বোকা নিয়ে কি সংসার করা চলে ? বন্ধুবাবুর স্ত্রী কোনও প্রতিবাদ করিল না। অবুঝ স্বামী, রোগ হইয়া আরও অবুঝ হইয়। গিয়াছে। তাহাকে মিষ্টি কথায় ভুলাইয়া রাখিতে হইবে, ছেলেমানুষকে যেমন লোকে ভোলায়। টাকাকড়ির বিষয়ে মাছুষের সঙ্গে সোজাস্বজি ব্যবহার ভাল। ফাকি দিয়া, ঠকাইয়। কতদিন চলে । স্বামীকে লে কথা বোঝানো শক্ত । এদিকে অবনীদের ধারণা, ঘন্ধবাৰু প্রভিডেন্ট ফণ্ডের মোটা টাকা আনিয়াছেন সঙ্গে। স্বামী স্ত্রী লইয়া সংসার, এতদিন কলকাতায় চাকরি করিয়াও দুই-পাচ হাজার বা ব্যাঙ্কে কোন না জমাইয়া থাকিবেন ? বাইরের লোকের সামনে অবনী বলে, দাদার হাতে পয়সা আছে। গভীর জলের মাছ, এ কি আর তুমি আমি ? র্যন্ত্রবাবুকে বলে, দাদা, টাকা ব্যান্ধে রাখা ভাল না, ৰে বাজার। ব্যাংলেন, তাতে