পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮২ ' বিভূতি-রচনাবলী নদীর ঘাটে যাবার পথে দ্বধারে শুধু বন আর বাগান। কোন বাগানে বেড়া দেওয়া নেই, ঘন দাশসেওড়া ও বনচলিতে গাছের ডালপালা প্রানার্থীদের গায়ে লাগে বলে দু'একজন গুচিবাইগ্রস্তা বিধবা পথের নিতাস্ত পাশের ভালগুলো হাত দিয়ে ভেঙে ভেঙে রেখেচেন। শ্রব . ঠাকরুণ বনের মধ্যে ঢুকে উকি মেরে কি দেখচেন, এমন সময় মুখুজ্যেদের সেজ বোঁ পেছন থেকে বললে—কি দেখছেন, ও খুড়ীমা ? —এই খয়েরখাগী কাঠালগাছটাতে কাঠাল আছে কিনা এক আধটা মা—একটা গাছ ক্টাঠাল, সব্বনেশেদের জন্যে যদি মা তার কিছু ঘরে উঠলো—নিজে থাকি অস্থখে পড়ে— – কে কাঠাল নিলে খুড়ীমা ? —কে নিয়েচে আমি কি চৌকি দিতে গিয়েচি বসে বসে } এই পাড়ার মধ্যেই চোরের ঝাড় —দ্যাখ তোর, না দেখ মোর। সব্বনেশে কলিকালে কি ধৰ্ম্মোজান আছে মা ? —চলুন খুড়ীমা ঘাটে যাই— প্রব ঠাকরুণ বকতে বকতে ঘাটের দিকে চলেন। স্বান সেরে এসে দুটো আলো চাল ফুটিয়ে ডুমুরের চচ্চড়ি করে ভাত বেড়ে নিয়ে খেতে বলেচেন এমন সময় দেখলেন বাড়ীর পেছনে কাগজী লেবু গাছটার তলায় কি খল খল শব্দ হচ্চে। জব ঠাকরুণ হাক দিলেন-কে রে নেবুতলায় ? ক্ষীণ বালিকাকণ্ঠে উত্তর এল-এই আমি কনক, ঠাকুমা— —কেন ওখানে কি শুনি ? কি হচ্চে ওখানে ? বের হয়ে আয় ইদিকে, সামনে আয় । একটি ম্যালেরিয়াশীর্ণ দশ এগারো বছরের বালিকামূর্তি অকুণ্ঠপদবিক্ষেপে লেবু ঝোপের আড়াল থেকে নিজান্ত হয়ে উঠোনে এসে জব ঠাকরুণের ক্রুদ্ধ দৃষ্টির সম্মুখে দাড়ালে। —এই আমার মার মুখে অরুচি–কিছু খেতে পারে না, তাই গিয়ে বল্পে—যা তোর ঠাকুরমার নেবুগাছ থেকে একটা নেৰুদ্রব ঠাকরুণ তেলেবেণ্ডনে জলে উঠে বললেন-হ্য ঘা—তোর বাবা নেৰুগাছ পুতে রেখে গিয়েছে, যা তুলে নিয়ে আয় গিয়ে যত সব চোর ছ্যাচড় নিয়ে হয়েচে—তোর মার অরুচি, তা হাটে নেবু কিনতে পারিস নে ? এখানে কি ? তোর বাবার গাছ আছে—এখানে ? বালিকা চুপ করে দাড়িয়ে রইল। দ্রব ঠাকরুণ অাপন মনে বকে যেতে লাগলেন। অনেকক্ষণ পরে বালিকা ভয়ে ভয়ে বল্পে -e #ांकूव्रबी—কি রে ? কি ? —আমি চলে যাব ? —কেন, তোকে কি বেঁধে রেখেচি নাকি ? যা— --নেৰুদেবেন না। এব ঠাকরুণ চুপ করে আপনমনে বড় বড় কয়েকটি ভাতের গ্রাস মুখে পুরে দিলেন, বঁ হাতে ঘটি নিয়ে ঢঙ্ক ঢক্‌ করে খানিকটা জল খেয়ে অপেক্ষাকৃত নরমস্বরে জিজ্ঞেস করলেন—