পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত ૨૨૯ তোমার কপাল। পিয়তিমের মত বেী ছিলে, সব তো দেখেচি স্বভাব-চরিত্তির সম্বন্ধে কেউ একটা কথা বলতি পারে নি কোনো দিন । —কেন, দেওরদের কোলেপিঠে করে মানুষ করি নি ? আমি যখন ঘর করতি এলাম, তোর সোয়ামী তখন ন’ বছরের ছেলে । আমার পাত থেকে বেগুন পোড়া ভাত মেখে থেতো—আর আজ আমি হুইচি নাকি ডাইনি— —চুপ করে দিদি। এসব কথা আমি সব জানি। এখন কি থাবে তাই বলে— নিস্তারিণী মিনতির স্বরে বল্লে—দুটো ভাত— —ন, আমায় বকিও না। সারাদিন কাজ ক'রে দুঃখধান্দ ক’রে এলাম। ছুটে মুড়ি নিয়ে এসেচি– —শোন ছোটবে, অভিলাষ আজ গরম মুড়কি মেখেচে, তারা ৰলে গেল— —না, সে সব হবে না। গুড়ের মুড়কি জর হ'লে খায় না। ছটে তেল চুন দিয়ে মুড়ি মেখে দিগ, খেয়ে এক ঘটি জল খেয়ে আজ রাত্তির মত পড়ে থাকে। শুনেচ কাগু, বাজারে নাকি চালের পালি দেড় টাকা ! ভাত আর খাতি হবে না। বলাই আর কত রোজগার করবে ? কি ক’রে এই বিধবার পুরী চালাবে ? ধান ফুরিয়ে এসেচে, এবার আমাদের মত গরীবদের না-খেয়ে মরণ । নিস্তারিণী স্তব্ধ হয়ে শুনলে । অসুস্থতার দরুণ সে বহুদিন অবধি বৈষয়িক ব্যাপারে নিম্পূহ, তবুও দেড় টাকা এক পালি চাল শুনে সে যেন অত জরের ঘোরের মধ্যেও চমকে গেল। সেকালে যে তাদের গোলার ধান বিক্রি হয়েচে,—আঠারো আন ক’রে সরু বশিলল। কি চামরমণি ধানের মন । মনে আছে একবার তার প্রথম পুত্রের অন্নপ্রাশনের জন্য গোল থেকে পচিশ টাকার ধান বিক্রি হয়—পাচ সিকা ছিল এক মন ধানের দাম । নিজের হাতে সে কত ধান বিলিয়ে দিয়েচে•••একবার গায়ে আকাল হয়েছিল, টাকায় সাড়ে তিন সের হয়ে উঠলো চালের দাম। বামুনপাড়ার মেজ গিন্নি একদিন তাকে বাড়ীতে ডেকে বল্লেন,—“বোঁ, তোমায় একটা কথা বলি। খাওয়াদাওয়ার বড় কষ্ট, দু’মন ধান আমাকে ধার দিতে হবে। ঈশ্বরের ইচ্ছেয় তোমার কোনো অভাব নেই। গোলা আরও উথলে উঠুক তোমার।” সে শাশুড়ীকে লুকিয়ে ছ'মন ধান বার করে দিয়েছিল গোলা থাকে। শাশুড়ী চিরকালের খাণ্ডার, কাউকে কিছু জিনিস দেওয়া পছন্দ করতে না কখনো । কিন্তু তখনকার দিনে এ সংসারে তার প্রতিপত্তি ছিল অন্য রকম । সে যা করবে তাই হবে। তার ওপর কথা বলবার কেউ ছিল না। কোথায় গেল সে সব দিন। সন্ধ্য। উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েচে । নিৰ্ম্মলা এক বাটি দুধ নিয়ে এসে বল্লে—ও দিদি, খেয়ে নাও একটু দুধ। ... " নিস্তারিণী বল্লে—আমার এখানে একটু বোস ছোটবেী—কেউ বলে না। নিৰ্ম্মলার বেশীক্ষণ এক জায়গায় বসবার জো নেই। এক্ষুনি সব খেতে চাইবে, শেষ রাত্রে উঠে চার কাঠ ধানের চিড়ে ফুটতে হবে বাড়ুজ্যেদের। O ه لاس ۹ هر f:R۰