পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থিয়েটারের টিকিট সকালে উঠেই আভা স্বামীকে বল্পে—ওগো, শীগগির করে বাজারটা করে এনে দাও— সকাল সকাল রান্নাবাড়া করে আবার তৈরী হ’তে হবে তো ? যা বেলা ছোট। অবিনাশ বল্লে—কি কি আনতে হবে, একটা ফর্দ করে রাখে। আমি কলম্বর থেকে চট্‌ করে আসি— আর একটু পরে কলঘর খালি পাওয়া যাবে না। —এখনই যায় কিনা দেখ–একটা কল, আর এই সাতঘর ভাড়াটে, এখন দোতলার বুধুর মা জল নিতে এসেচে, এই তো দেখে এলুম। --না, বাড়ীটা বদলাবে। এই সামনের মাসেই, এরকম কষ্ট আর পোষায় না । দেখে এস বুধুর মা আছে না গেল—সকালে উঠে একটু চান করবার জো নেই! আভা খুকীকে কাল রাত্তিরের বাসি রুটি ও একটু গুড় একখানা কলাইকরা রেকাবিতে বার করে দিয়ে চঞ্চল পদে নৃত্যের লঘুচটুল ভঙ্গিতে কলঘরের দিকে গেল এবং তখুনি ফিরে এসে বল্লে—শীগগির যাও—এখুনি আবার বুড়ে নিবারণবাবু নাইতে আসবে-খালি আছে— তারপর সে বাজারের ফর্দ করতে বসলো :– আলু—একপো বেগুন—একপে রাঙা শাক-—আধপয়সা কাচকলা—একপয়সা কুন—একপয়সা পান-দু’পয়সা অবিনাশ কলম্বর থেকে ফিরে এসে বল্পে—পান দু’পয়সা ? আভা ঘাড় দুলিয়ে বল্লে—তা হবে না ? ওবেলা এককোঁটো পান সেজে সঙ্গে করে নিতে হবে না ?--রাস্তায় যেখানে স্লেথানে পান কিনতে আমি তোমায় দেবো না বাপু । অবিনাশ বাজারে চলে যাওয়ার পরে আভা উন্থনে কয়লা দিয়ে কলম্বরের দিকে গেল নাইতে। তৰু আজ রবিবার তাই অনেকটা রক্ষে-সময় তাও খুব বেশী কোথায় ? খেতে খেতেই তো আজ বেল বারোটা বেজে যাবে এখন তারপর সাজগোজ তৈরী হওয়া...একটার তোপ পড়লে ফুটে বাজতে আর কত দেরি থাকে ? 尊 —খুকী, ও খুকী, শোন তুই আর আমি এক জায়গায় বসবে৷ কেমন তো ? ওমী মুখে সিস্থর মেখে ভূত হলি যে ! তুই ঠিক যেন একটা—হি-হি-হি— খুকীর হাত থেকে সি দুরকৌটে। ছো মেরে কেড়ে নিয়ে কড়ি থেকে দোদুল্যমান দড়ির শিকেতে তুলে রেখে আভা হাত উচু করে ওপরদিকে হাস্তোচ্ছল মুখখান তুলে বল্লে—উড়ে গের্ল-হল—বা — খুকীর আসরপ্রায় কাম অপ্রত্যাশিত বিস্ময়ে পরিবর্তিত হওয়াতে সে অবাক চোখে মায়ের