পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত ২৬৭ মালবের ভাষা সে একরকম আয়ত্ত করে ফেলেচে এক বৎসরে । এই সময়ে একদিন সে তার সেই পরিচিত উদ্যানবাটিকাতে ঢুকলো পথের পাশে রথ থামিয়ে । পুষ্পে পুষ্পে, নববল্পপল্লবে, চুতমুকুলের মুবাসে, কোকিল-ঝঙ্কারে, প্রাচীন উদ্যান তার বৃদ্ধত্ব পরিহার করে নবযৌবনের রূপ পরিগ্রহ করেচে, নিভৃত লতাগৃহ যেন গ্রীক রতি-দেবতার আসন্ন পাদস্পর্শের আগ্রহুে উৎসববেশে সজ্জিত হয়েচে । সেই পাষাণবেদীতে সে মুগ্ধ মনে চুপ করে বসে আছে, এমন সময় কার পদক্ষেপের শব্দে চমকে পিছন ফিরে যা দেখলে তাতে সে বিন্মিত ও বিচলিত হয়ে উঠলে । একটি রূপসী তরুণী তার পিছনে কিছুদূরে দাড়িয়ে । অপূর্ব তার অঙ্গলাবণ্য, ক্ষীণ কটিতটে রত্নমেখলা, নিবিড় কৃষ্ণ কেশপাশে টাটক৷ তোল যুখীগুচ্ছ, গ্ৰীক মেয়েদের মত দীর্ঘদেহী অথচ তম্বী । মেয়েটি অবশ্য ভারতীয়া, সাজপোশাকেই হেলিওডোরাস বুঝল । মেয়েটিও তাকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েচে মনে হ’ল হেলিওডোরাসের । বিস্ময়ে তার চারু আয়ত কৃষ্ণ নেত্রদুটি স্তব্ধ অচঞ্চল। কিছুক্ষণ দু'জনের কেউ কথা বল্পে না । তারপর হেলিওডোরাস উঠে দাড়িয়ে বল্লে-ভদে, এ উদ্যান বোধ হয় আপনাদের । আমি পথিক, বেড়াতে এসে একটু বসেছিলাম— মেয়েটি কোন কথা না বলে ফিরে যেতে উচ্চ্যুত হ’ল । হেলিওডোরাসের মৃঢ়তা ততক্ষণ ঘুচেছে। সে হাজার হলেও গ্রীক ভদ্রলোক। বিনীত স্বরে বল্পে—একটু দাড়াবেন দয়া করে ? আমার এই অনধিকার প্রবেশের জন্যে আমি বিশেষ লজ্জিত—আমায় যদি ক্ষমা করেন— মেয়েটি যেন কম্পিত অগ্নিশিখা, নিজের মহিমায় নিজে দীপ্তিমতী । হেলিওডোরস এই ভারতীয় মেয়েটির অপরূপ রূপমাধুরীতে কেমন বিস্মিত হয়ে উঠেচে । এত রূপ হয় এদেশের মেয়ের ? এমন শ্বেতাঙ্গ সুন্দর দেহকান্তি যে-কোনো স্বন্দরী গ্রীক তরুণীর পক্ষেও দুল্লভ ••• মেলিবিয়া কোথায় লাগে । হেলিওডোরাস সসঙ্কোচে তার কথা শেষ করবার অতি অল্পক্ষণ পরেই মেয়েটি নম্রস্বরে বল্লে— আপনি কি গ্রীকৃ ? —ই, ভদ্রে--- —অল্প দিন এসেচেন এখানে ? * --না ভদ্রে ৷ এক বৎসর হ’ল—আমি রাজসভার ৬ক্ষশিলার গ্রীক দূত—আমার নাম হেলিওডোরাস— so রূপসী বালিকা বিস্ময়ে কৃষ্ণ ভ্রযুগল উদ্বদিকে ঈষৎ তুলে হেলিওডোরাসের দিকে পূর্ণদৃষ্টিতে cs® zoe—e !•••••• —কেন ? আমার কথা কি আপনি শুনেছিলেন ? —ই। বাবার মূখে শুনেছিলাম সভায় একজন রাজদূত— Ač হেলিওডোরাস মনে মনে ভাবলে, ইনি বোধ হয় কোনো রাজ-অমাত্যের কন্যা বেন।