পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত সাহস হ’ল না কিন্তু । দূর থেকে দেখা গেল গর্তদেউলের অন্ধকারে ধাতুপ্রদীপের আলোয় বাস্থদেবের প্রস্তরমূৰ্ত্তির মুখ । কোথায় যেন সে এ মুখ দেখেচে, ঠিক মনে করতে পারলে না। কোথায় ?... কবে ? অন্য লোকের দেখাদেথি হাত জোড় করে প্রার্থনা করলে—হে বাস্থদেব, আমি বিদেশী, বিধৰ্ম্মী। তোমার কাছে এসেচি। তুমি নাকি মানুষের মনের বাসনা পূর্ণ কর । আমার মনের বাসনা তুমি জানে, আমি অন্য ধর্মের লোক বলে তুমি আমার প্রার্থনা অবহেলা করতে পারবে না কিন্তু । আমার নাম হেলিওডোরাস-—তক্ষশিলায় আমার বাড়ী । মনে করে রেখে— o বাস্থদেবের বিশাল মন্দিরের পাষাণচুড়া বৈশাখী পূর্ণিমার জ্যোৎস্নায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেচে । নরনারীর ভিড় ক্রমশই বাড়চে—হয়তো এখানে আজ কোনো উৎসব আছে। নরনারীদের মধ্যে কেউ কেউ তার দিকে কৌতুহলের দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে গেল—হয়তো ভাবলে একজন গ্ৰীক যুবক বাস্থদেবের মন্দিরে কি করচে ? ' একটি লোককে দেখে হেলিওডোরাস তাকে ডাক দিলে । লোকটি ছুটে এল তার কাছে, তার গলায় উপবীত, কপালে চন্দনের ফোট, শিখায় পুষ্প বাধা । হেলিওডোরাসের অনুমান যথার্থ, সে মন্দিরের একজন পরিচারক ব্রাহ্মণ বটে । লোকটিকে সে বল্লে—কত লাগে তোমাদের দেবতাকে কিছু ফলমূল মিষ্টান্ন কিনে দিতে ? একজন গ্রীকের এত ভক্তি দেখে বোধ হয় লোকটি একটু অবাক্ হয়ে ওর মুখের দিকে জিজ্ঞাস্ব দৃষ্টিতে চেয়ে বল্লে—আপনি কি পূজো দেবেন ? --ॐ] | —যা দেবেন আপনি । দু দীনার, দশ দীনার— —তক্ষশিলার স্বর্ণমুদ্রা এখানে চলবে? —কেন চলবে না হুজুর ? শ্রেষ্ঠীর দোকানে ভাঙিয়ে নিলেই চলবে— —আচ্ছা নিয়ে যাও । আমার নাম হেলিওডোরাস, নাম মনে থাকবে ? আমার নামে এই মুদ্রার পরিমাণ ফলফুল মিষ্টান্ন কিনে দেবে—কেমন তো ? —নিশ্চয়ই। বামুদেবের নামে দিচ্চেন—আপনি দেখচি একজন ভক্ত । —আমার দক্ষিণাট1– হেলিওডোরাস পূজারীকে আরও কিছু দিয়ে সেখান থেকে বার হয়ে মন্দিরের সিংহদ্বারের কাছে এল । সেই দিনটির পর সে মাঝে মাঝে প্রায়ই বাস্থদেবের মন্দিরে এসে একবার করে দেবতাকে তার প্রার্থনা জানিয়ে যায়। মাসের পর মাস চলে গেল, মন্দিরের দেবতা তার প্রার্থনা শুনলেন কই ? কোথায় তার মানসীপ্রতিমা...যার জন্তে এত আকুল প্রতীক্ষা ? কেবল হাটাইটিই সার ,