পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত ९११ —সব হয়ে যাবে বাস্থদেবের কৃপায় । চলে আজ দুজনে মন্দিরে যাই—তুমি একদিক থেকে, আমি অন্তদিক থেকে । মানত করে আসি তার কাছে। র্তার কৃপায় সব সম্ভব । হেলিওডোরাস ইতিমধ্যে রাজসভায় যথেষ্ট মুখ্যাতি অজ্জন করেছিল নানাদিক থেকে । তক্ষশিলার প্রধান অমাত্যের পুত্র সে—উভয় রাজ্যের মধ্যে একটা মৈত্রীবন্ধন দৃঢ় হয়ে উঠচে হেলিওডোরাসের রাজদূতরূপে উপস্থিতিতে। তরুণ দলের সে একজন নেতা–তার স্বঠাম দেহকান্তি ও পুরুষোচিত ক্রীড়া ও ব্যায়ামনৈপুণ্যের জন্য তরুণ নাগরিকগণ তাকে অত্যন্ত মানে । তার ওপর হেলিওডোরাসের খ্যাতি রটে গিয়েছিল যে, সে গ্রীক হলেও বাস্থদেবের একজন ভক্ত 1••• 3 নৃপতি ভাগভদ্র প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, কিন্তু শেষ পয্যন্ত তিনি হঠাৎ কেন এ বিবাহে সম্মতি দিলেন তা কেউ জানে না । স্বয়ং মহারাণী পট্টমহাদেবী কুমারললিতা তার খবর রাখেন। সেদিন নিশীথরাত্রে রাজা ঘৰ্ম্মাক্ত-কলেবরে পর্যাঙ্ক থেকে ধড়মড় করে ঘুম ভেঙে উঠলেন। রাজ্ঞী ব্যস্তভাবে বল্লেন—কি হয়েচে গো, অমন করচো কেন ? —একটু জল দাও—উঃ কি ভীষণ– জল দাও— রাজ্ঞী স্বর্ণভৃঙ্গার থেকে জল দিয়ে বল্পেন—কি হয়েচে—কি হয়েচে– নৃপতি এক দুঃস্বপ্ন দেখেচেন। এক চওপুরুষ তার কাছে এসে এক বিশাল শূল আস্ফালন করে হুঙ্কার দিয়ে বলচেন---রে ভাগভদ্র, আমি কে চেনে ? তোমার বংশের কুলদেবতা । হেলিওডোরাসের সঙ্গে তোমার কন্যার বিবাহে যদি সম্মতি না দাও —তবে তোমার মালবরাজ্য এই শূলের আগায় উড়িয়ে দক্ষিণ সমুড়ে ফেলে দেবে—ও আমার জন্ম-জন্মান্তরের ভক্ত। বলেই সেই চণ্ডপুরুষ কি ভীষণ হুঙ্কার ছাড়লে !...শূলের অগ্রভাগ থেকে রক্ত অগ্নিশিখা যেন দাউ দাউ করে পরিব্যাপ্ত হয়ে পড়লো ঘরে ঘরে—উ:, কি ভীষণ দুঃস্বপ্ন! রাঞ্জী বল্লেন—বেশ তো । হেলিওডোরাস স্বন্দর ছেলেটি, তাকে আমি দেখেচি—মালবিকার সঙ্গে বড় স্বন্দর মানাবে। তোমার মেয়েরও সম্পূর্ণ ইচ্ছে— বল কি রাজ্ঞী ! মেয়ে কি ওকে দেখেচে ? রাজ্ঞী হতাশার স্বরে হাত-দুটি শূন্যের দিকে ছুড়ে বল্লেন–নিৰ্ব্বোধ নিয়ে ঘর করা যায় তো অল্পবুদ্ধি নিয়ে ঘর করা চলে না—কথাতেই বলেচে। ওরা হল আজকালকার মেয়ে— আর কি আমাদের মত সেকাল আছে ? কোনো অমত কোরো না । হেলিওডোরাস আমাদের ধৰ্ম্ম গ্রহণ করবে বিয়ে হ’লেই, তুমি দেখে । আর ওরকম আজকাল তো হচ্চেই । তক্ষশিলায় আমার এক পিসতুতো বোনের ননদের যে একজন গ্ৰীক তালুকদারের সঙ্গে বিয়ে হয়েচে— অতএব হেলিওডোরাসের সঙ্গে মালবিকার বিবাহে বাধা রইল না। পিতা ডিওন পত্রবাহকের হাতে লিখে পাঠালেন—খুব স্বখের কথা বাবা। আমি *