পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩e২ विङ्कडि-ब्रक्रमांदलौ আয়না, একটা টুকনি ঘটি, একটা স্বগৃষ্ঠ কোঁটা ইত্যাদি। এটা কেমন ? ওটা কেমন ? সে এসব কিনিয়াছে। তাহার খুশী ও আনন্দ দেখিয়া অতি তুচ্ছ জিনিসের প্রশংসা না করিয়া পারিলাম না। এতক্ষণ ভাবিতেছিলাম, ইহাকে এ পথে আসিবার জন্য তিরস্কার করি এবং কিছু সন্থপদেশ দিয়া জ্যাঠামশায়ের কর্তব্য সমাপ্ত করি। কিন্তু হাজুর খুশী দেখিয়া ওসব মুখে আসিল না । যে কখনো ভোগ করে নাই, তাহাকে ত্যাগ করে যে বলে, সে পরমহিতৈষী সাধু হইতে পারে, কিন্তু সে জ্ঞানী নয়। কাল ও ছিল ভিখারিণী, আজ এ পথে আসিয়া ওর অন্নবস্ত্রের সমস্ত ঘুচিয়াছে, কাল যে পরের বাড়ী চাইতে গিয়া প্রহার খাইয়াছিল, আজ সে নিজের ঘরে বসিয়া গ্রামের লোককে চা খাওয়াইতেছে, নিজের পয়সায় কেনা পেয়াল-পিরিচে—যার বাবাও কোনোদিন শহরে বাস করে নাই বা পেয়ালায় চা পান করে নাই। ওর জীবনের এই পরম সাফল্য ওর চোখে । তাহাকে তুচ্ছ করিয়া, ছোট করিয়া, নিন্দা করিবার ভাষা আমার যোগাইল না । g সংকল্প ঠিক রাখা গেল না । হাজু চা করিয়া আনিল । আর একখানা র্কাসার মাজ রেকাবিতে স্থানীয় ভাল সন্দেশ ও পেপে কাটা কত আগ্রহের সহিত সে আমার সামনে জলখাবারের রেকবি রাখিল । সত্যিই আমার গা ধিন্‌ ধিন্‌ করিতেছিল। এমন জায়গায় বসিয়া কখনো খাই নাই। এমন বাড়ীতে । কিন্তু হাজুর আগ্রহভরা সরল মুখের দিকে চাহিয়া পাত্রে কিছু অবশিষ্ট রাখিলাম না। হাজু খুব খুশী হইয়াছে—তাহার মুখের ভাবে বুঝিলাম । বলিল—কেমন চা করিচি জ্যাঠামশায় ? চা মোটেই ভালো হয় নাই—পাড়াগেয়ে চা, ন গন্ধ, না অস্বাদ । বলিলাম— কোথাকার চা ? –এই বাজারের । –তুই নিজে চা খাস ? —ছ, দুটি বেলা। চা না খেলে সকালে কোনো কাজ করতে পারি নে, জ্যাঠামশায়। আমার হাসি পাইল । সেই হাজু!— ছবিটি যেন চোখের সামনে আবার ফুটিয়া উঠিল। রায়বাড়ীর বাহিরের ঘরের পৈঠার কাছে বসিয়া খোলামৃদ্ধ তরমুজের টুকরা হাউ হাউ করিয়া চিবাইতেছে। সেই হাজু চা না খাইলে নাকি কোনো কাজে হাত দিতে পারে না । e বলিলাম—ত হোলে এখন উঠি হাজু। সন্দে উতরে গেল। আবার অনেকখানি স্বাস্ত যাবো । হাজ্বর দেখিলাম, এত শীঘ্র আমাকে যাইতে দিতে অনিচ্ছা । গ্রামের এ কেমন আছে, সে কেমন আছে, জিজ্ঞাসাবাদ করিল। বলিল—একটা কথা জ্যাঠামশায়, মাকে পাঁচটা