পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

का? विकि बूज्जा জামি গাছ বিক্রি পছন্দ করি না । কোনো গাছ যদি কেউ কাটে তবে আমার বড় কষ্ট হয় । লোককে পরামর্শ দিই গাছপালা দেশের সম্পদ, ধরণীর ঐ ওরা বাড়িয়েচে ফুলে, ফলে, ছায়ায় সৌন্দর্য্যে—ওদেরই ডালে ডালে দিন রাত কত বিহুগ-কাকলী, ওয়ের কেটে নষ্ট কোৱো না। স্বতরাং যখন গ্রামের ঘাটে কাঠের নৌকো এসে লাগলো, আমি সেটা পছন্দ করি নি। একদিন সকালে বসে লিখচি, একজন দাডিওয়ালা বুড়ে মুসলমান এসে উঠোনে দাডিয়ে আমায় সেলাম করলে হাত তুলে । বললাম—কি চাই ? —বাবুর গাছ ৰিক্রি আছে, বিক্রি করবেন ? —কি গাছ ? —বাবুর বাড়ীর পেছনে বিলিতি চট্ৰকা আছে, বাগানে শিশু আছে, কলুচটকা আছে। লোকটার কথায় দক্ষিণের টান ! বললাম—বাড়ী দক্ষিণে ? —হঁ্য বাবু, বসিরহাটের ওপার । টাকি শ্রীপুর। —গাছ কিনতে এসেচ নাকি ? —বাবু, আমাদের নৌকো এলেচে ঘাটে। কাঠ বোঝাই হয়ে কলকাতায় যাবে। আপনার এদিকে যদি বাগান-টাগান পাওয়া যায় কিনবো । বাগান কেনা শুনে আমি আগেই চটেচি, স্বতরাং লোকটার সঙ্গে ভালো করে কথা বললাম না । ও বললে—বাবু, গাছ বেচবেন ? —o I —ভালো দর দেবো বাৰু ৷ —কি রকম দর শুনি ? —তা বাৰু আপনার বড় চট্ৰক গাছটা চল্লিশ টাকা দর দেবো। আমি আশ্চর্ধ না হয়ে পারলাম না! এ অঞ্চলে ও গাছের দাম যুদ্ধের আগে একজন বলেছিল ছ টাকা । যুদ্ধের মধ্যে ওর দাম উঠলো চোদ টাকা। ওটাকেই সৰ্ব্বোচ্চ দাম বলে আমি ভেবেছিলাম r একটা বুনো চটকা গাছের দাম চোদ্দ টাকা—ওই যথেষ্ট। আশাতিরিক্ত দর । আর এখন এ বলে কি ৷ চল্লিশ টাকা একটা চটকা গাছের স্বাম—এ কথা পাঁচ বছর আগেও কেউ কানে শোনে নি। আমার বাগান-সংলগ্ন জমিতে এরকম চটুকী গাছ পাঁচ-ছটা আছে, বেশ মোট পয়সা পেতে পারি দেখচি গাছ কটা বিক্রি করলে। হঠাৎ মনে পড়লে নেপলস উপসাগরের তীরে কোনো এক বড় গাছতলায় মিনি বসে বই লিখতেন, নীল জলরাশি তীর চোখের সামনে দূর স্বল্পজগতের বাণী ভাসিয়ে আনতে খনন