পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশলতিকার সন্ধানে সন্ধ্যার কিছু আগে নীরেন ট্রেন হইতে নামিল । তাহার জানা ছিল না এমন একটা ছোট্ট স্টেশন তাদের দেশের । কখনো সে বাংলা দেশে আসে নাই ইতিপূৰ্ব্বে এক কলিকাতা ছাড়া । নীরেনের দাদামশাই রায় বাহাদুর খামাচরণ গাঙ্গুলী তাহাকে বলিয়া দিয়াছিলেন বাংলাদেশের পল্লীগ্রামে গিয়া সে যেন জল ন ফুটাইয়া খায় না, মশারি ছাড়া শোয় না, নদীর জলে ন। স্নান করিয়া তোলা জলে স্নান করে । নীরেনের স্বাস্থ্যটি বেশ চমৎকার, ডাঙ্গেল মুগুর ভজিয়া শরীরটাকে সে শক্ত করিয়া তুলিয়াছে, বড়লোকের দৌহিত্র, অভাব অনটন কাহাকে বলে জানে না । মনে নীরেনের বিপুল উৎসাহ । চোখের স্বপ্ন এখনও কঁাচা, সবুজ । 鬱 একটা লোক প্লাটফর্মের প্রান্তে দাড়াইয়া প্লাটফর্মে সাজানো দূৰ্ব্বাঘাসের ওপর গরু ছাড়িয়া দিয়া গরুর দড়ি হাতে দাডাইয়া ছিল । নীরেনের আহবানে সে নিকটে আসিল । নীরেন বলিল—রামচন্দ্রপুর কতদূর জানো ? লোকটা বলিল—কেন জানবো না ? মেটিরি রামচন্দ্রপুর তো ? এখেন থে বাড়া তিনকোশ পথ-- —তিন কোশ । —ই বাবু । কনে যাবেন সেখানে ? -बैंiफूष्या बांख्नेौ । —তা যান বাবু এই পথ দিয়ে— নারেনের কাছে এ সব একেবারেই নতুন । এই আসন্ন সন্ধ্যায় মাঠের মধ্যের পথ দিয়া সে যাইবে তিনক্রোশ দূরের গ্রামটিতে। ওই মাঠের মধ্যে কত মাটির ঘরে ভৰ্ত্তি পাড়াগায়ে পাশ কাটাইয় তাহাকে যাইতে হইবে । মাত্র ছাব্বিশ বৎসর বয়স যার—দুনিয়া তার পায়ের তলায়, সে অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে স্বর্ণখনির সন্ধানে বাহির হইতে পারে, সে উত্তরমেরু-অভিযানে একঘণ্টার নোটিশে যোগ দিতে পারে, মাত্র একটা ছোট স্বটকেসের মধ্যে টুথব্রাশ আর তোয়ালে পুরিয়া । @ চৈত্র মাস। স্টেশনের পিছন্নে মাঠের ধারে বড় একটা নিম গাছ। ফুটন্ত নিমফুলের ভূরভূরে হবাস বাতাসে। নিমগাছ অবহু তাদের আলিগড়েও আছে, কিন্তু এমন রহস্যময়ী অজানা সন্ধ্যা মাঠের প্রাস্তে তাহার জীবনে কটা নামিয়াছে ? নামে জানে, যদিও সে দিল্লী ও আলিগড়ে মাস্থ্য, একবার কানপুরে আসিয়া ভাবিয়াছিল aায় বাংলাদেশের কাছে আসিয়া পড়িয়াছে বুঝি। পাঞ্জাবের অসম জলহাওয়ায় তার শরীর গড়িয়া উঠিয়াছে—হয় ভীষণ শীত, নয়তো ছৰ্দান্ত গরম—একশো বত্রিশ ডিগ্রী উত্তাপেছ