পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৩৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

`ंवश्ii५ींद्रं et ծ চায়ের বদলে বেলের শরবত উপায় কি ? খাইতেই হইল তাহাকে । বুড়ী বলিল—তুমি কি মনে করে এসেছিলে ভাই ? সেই কথাটা বলাই নীরেনের পক্ষে শক্ত । সে যে জন্য আসিয়াছে প্রিয় পৈতৃক পল্লীগ্রামটিতে, বৃদ্ধ কি সে কথা বুঝিতে পরিবে ? সে বলিল—বেড়াতে এলাম দিদিমা । –এর আগে কখনো জাস নি ? —না দিদিমা । দুপুরের আগেই তাহার যাওয়ার ইচ্ছা ছিল এখান হইতে, কিন্তু বুড়ী ছাড়িল না। দুপুরের পরে রোদ অত্যন্ত চড়িল। বেলা চারটার আগে বাহির হওয়া সম্ভব হইল না। যাইবার সময় বুড়ী তাহার মাথায় হাত দিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিল—এসো, এসো, ভাই, তোমার সইমার সঙ্গে দেখাশুনো করে আবার এখানে আসবে কিন্তু । ভুলে যেও না ভাই। আচ্ছা ভাই । আধ ঘণ্টার মধ্যে নীরেন আসিয়া মাদারহাটির মাঠ ও জলার মধ্যে পড়িল । প্রকাও বিল, পদ্মফুল ফুটিয়া থৈ থৈ করিতেছে, পদ্মের পাতার ভিড়ে জল দেখা যায় না, একদিকে একটি অস্তরীপ মতন স্থানে অনেকগুলি বড় বড় গাছ—নীরেনের ইচ্ছা হইল ওই গাছগুলির তলায় সে কিছুক্ষণ বসিয়া বিশ্রাম করে । এই স্বন্দর জলাভূমি যেন কাশ্মীরের ডাল বা উলার হ্রদের মত শোভাময়, কিন্তু এসব স্থানে টুরিস্ট ব্যবসায়ীদের ঢাক পিটানোর শব্দ নাই, স্বতরাং এমন স্বন্দর একটি সৌন্দৰ্য্যময় স্থানে কখনো কেহ আসে না । সইমাদের গ্রামটিতে জঙ্গল তত নাই—ব্রাক্ষণপাড়ায় অনেকগুলি কোঠাবাড়ী, প্রায়ই সব চাষী গৃহস্থ, বড় বড় গোলা উঠানে, গোয়ালবাড়ী ভৰ্ত্তি গরু । একজনের উঠানে দোতলা বাড়ী তৈয়ারি হইতেছে, উঠানের বাতাবী লেবু গাছের তলায় মজুরের দুমদাম শব্দে স্বরকি ভাঙিতেছে । নীরেন সেখানে দাড়াইয়া জিজ্ঞাসা করিল—চকত্তিদের বাড়ী যাব কোন দিকে ? একজন বলিল—কোন চকত্তি ? অনেক চকত্তি আছে এ গায়ে । —yভুবনমোহন চক্কত্তি— —সে ও পাড়ায়। ওই তেঁতুল গাছের পাশের রাস্তা দিয়ে যান— আধঘণ্টা পরে সে সইমাকে প্রণাম করিয়া তাহার প্রদত্ত পিড়িতে বসিয়া কথাবার্তা বলিতেছিল। নীরেন দেখিল তাহার সইমার বয়স খুব বেশি নয়, মাথার চুল এখনও একগাছি পাকে নাই, রং বেশ ফর্সা, দোহার চেহারা, এক সময়ে যে ইনি সুন্দরী ছিলেন, এখনও দেখিলে বোঝা যায়। o সইম চোখের জল ফেলিলেন । অনেক আশীব্বাদ করিলেন। পাকা বেলের শরবত, মুগের ডাল ভিজানো ও আখের গুড় খাইতে দিলেন। সইমাকে পাইয়া নীরেন যেন হারানো মায়ের সান্নিধ্য বহুদিন পরে অনুভব করিল ! সে লইমাকে কখনো দেখে নাই এর আগে । সইম কিন্তু তাহাকে দেখিয়াছিলেন সে যখন দুই বৎসরের খোক, তখন। প্রৌঢ় মহিলার বহু পুরানো দিনের শোকস্থতি উখলাইয়া উঠিল আজ তাহাকে পাইরা। এমন কত লোকের নাম করিতে লাগিলেন যাহাঁদের কথা মায়ের মুখে জালিগড়ে সীরেল গুনিত বাল্যকালে— fસ. ૧, ૧-૨૭