পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

锣>8 বিভূতি-রচনাবলী আরামডাঙার মাঠে আউশ ধানের কচি সবুজ জাওলা ও খেজুর গাছের সারি। সাদা সাদা বক চরচে ঘন সবুজ কচুরিপানার দামে। এ জগতে যেন যুদ্ধ নেই, অশাস্তি নেই, চালের দোকানের দীর্ঘ শ্রেণী নেই, উড়ন্ত এরোপ্লেন থেকে বোমাবর্ষণ নেই। আম কুড়োনে৷ এ সময় একটা আনন্দের ব্যাপার। আজ সকালে নদীর ধারে যাচ্চি, তেঁতুলতলী আম গাছটার তলায় দেখি হাজরি জেলেনী আম কুড়চ্চে। আমি যেতে না যেতে খপ করে একটা আম তুলে নিলে তল থেকে। তখনও ভাল করে ভোর হয়নি। পাগলা জেলের মা আর হাজরি জেলেনী এই দুজন আম কুড়বার উদ্বেগে বোধ হয় রাত্রে ঘুমোয় না—নইলে অত সকালে ওঠে কি করে ? সেদিন পাগলা জেলের মা ওর ঝুড়ি থেকে একটা পাকা আম আমায় দিয়ে গিয়েছিল। এইমাত্র একটা মশা মারলুম। আজ কল্যাণীকে নিয়ে ফুচু, হর, বুধে প্রভৃতি ছোট ছোট ছেলেরা নৌকো নিয়ে বেড়াতে গেল বিকেলে, আমিও সঙ্গে গেলুম। অনেক দিন ওপারে যাইনি—মাঠ ছাড়িয়ে যে একটা পথ আছে, সেটা ভুলে গিয়েছিলুম। সেই পথ পর্য্যন্ত গিয়ে একটা নিমগাছ থেকে ডাল ভেঙে নেওয়া হোল দাতনের জন্যে । আমি নিজে নেীকো বেয়ে ঘাটে ভিড়িয়ে দিলাম—যেমন ও-বেলা তেঁতুলতলা ঘাট থেকে সাতার দিয়ে এসেছিলুম আমাদের ঘাটে। জলে নামলুম দুজনে, জল খুব বেড়েচে । আর বর্ষার আকাশে মেঘের দৃপ্ত অদ্ভুত। সেই সাইবাবলা গাছটার ডালে ডালে রাঙা আলো । দেখে একটা অনুপ্রেরণা মনে জাগলো—বিশ্বের মহাশিল্পীর পরিকল্পনার মহনীয়তা আমার চোখের সামনে স্বপরিস্ফুট। নীল আকাশের দেবতার উদ্দেশে প্রার্থনা করি— এই পটভূমি নিয়ে এদেশের একখানা Epic উপন্যাস লিখবো আমি । নীল কুঠার পুল থেকে শুরু করবো । গত ৫৬ দিন ভীষণ বর্ষার পর আজ প্রথম রোদ উঠেচে । এখনও অনেক আম—তেঁতুলতলীতে আম কুড়-ই রোজ। গাছতলায় পাকা আম কুড়-ই। আজ ভোরে মুখ ধুয়ে ফিরচি নদীর ঘাট থেকে, বঁাশতলীর একটি টুকটুকে আম টুপ করে পড়লে আমার সামনে—কুড়িয়ে নিয়ে এলুম। কল্যাণী সেটি লক্ষ্মীকে দিলে। বিকেলে তামাচরণ দা’র ছেলে হর বল্পে, নেীকে বেড়াতে যাবেন না ? আমি তখন বেরিয়ে গিয়েছি বঁাশ-বাগানের পথে গাব গাছটার কাছে। অনেকদিন যাইনি নৌকোতে —কেবল যা গিয়েছিলুম কাল না পরশু। নলে জেলের নৌকো ছাড়া হোল। বেশ মেঘমুক্ত বিকেলটি, না গরম, না ঠাও। দুধারে দীর্ঘ দীর্ঘ নলখাগড়ার খামল সবুজ ঝোপ, ছোয়ারা লত, বম্ভেবুড়ো গাছের সারি, জলজ ঘাসের ঝোপ—সবুজ, সবুজ, এত সবুজও আছে এদেশে ; সবুজ সৌন্দর্ঘ্যের ফুলঝুরি যেন চারিধারে । ক্রমে ফুঠী ছাড়িয়ে গেল। নীলকুঠী এখন আর নেই, ভাঙা হাউজ ঘর আছে—এমন ঘন বন সেখানে যে দিনমানেই বাঘ লুকিয়ে থাকে। ঐ BB BBBB BB BBBS BBSBBS BB BBBBBB BBBB BB BBBS BB B t