পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

८छ् षङ्गं] कुथ्t क्ष७ 8●ぬ বেশ জায়গায় । সামনে দূরবিষ্কৃত শালবন ও সবুজ ধানবন। আজ চাকুলিয়ার হাট, সাওতাল মেয়েরা বাটা নিয়ে বিক্রি করতে আসচে চাকুলিয়ার হাটে । কল্যাণী কেবল বলচে, বঁটা কিনলে হোত । 像 ওখান থেকে এলুম ঘাটশিলা। বেলা ৫টার সময় চা খেয়ে আবার মোটরে বার হই এবং স্ববর্ণরেখা সেতু পার হয়ে রাখা মাইন মিলিটারী ক্যাম্পে লেফটেনাণ্ট জহুরী ও বোসের আতিথ্য গ্রহণ করি । সকালে রাখা মাইন থেকে চা খেয়ে বার হয়ে কালিকাপুর রোড আপিসে এসে গল্পগুজব করি। সেখানে হেলিওডোরাসের গল্পটি পাঠ করি । বেশ জায়গা কালিকাপুর । চাইবাসা এলুম বেলা বারোটার সময়ে। দ্বিজুবাৰু এলেন ঘাটশিলা থেকে—খুব মিটিং হোল। সারা রাত্রি কোলহান পার্কে রাত জেগে আবৃত্তি ইত্যাদি করা গেল ও শেষ রাত্রের জ্যোৎস্নালোকে চলে এলুম মোটরে চক্ৰধরপুর। দ্বিজুবাবুকে নামিয়ে দিয়ে আমরা সেই অপূৰ্ব্ব জোৎস্নালোকে পোড়াহাট পাহাড় ও বনানীর মধ্যে দিয়ে হেলাডি বাংলোতে পৌছুলুম। মোটরে আসতে আসতে মনে হচ্ছিল আজ আমাদের দেশের হাটবার ছিল । মোটরেই ঘুমিয়ে নিলাম। ভোর হোল—চ খেয়ে চলে এলুম হিডনি falls-এ। স্থানটির কি অপূৰ্ব্ব গাম্ভীৰ্য্য। উত্তর শৈলগাত্র বেয়ে এই বড় ঝর্ণাটা পড়চে–চারিপাশে ঘন বনানী, চুণা পাথরের ধ্বসে পড়া চাই। স্নান করার সময়ে রাচির হুড়, জলপ্রপাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বনের মধ্যে দিয়ে সরু পায়ে চলার পথ বেয়ে আমি, স্ববোধবাবু, মিঃ সিন্‌হা ও পরেশ সান্ন্যাল চলে এলুম। জলপ্রপাতের এপারে পাথরের আসনে বসে লিখচি। জলপ্রপাতের গভীর শব্দ বনের বনস্পতিতে প্রতিধ্বনিত হচ্চে যুগ-যুগান্তের বাণীর মত। কি গভীর শোভা ! এক ধারে বনে অসংখ্য Lantana Camera ফুটে আছে। কানের কাছে স্ববোধ কেবল বলচে, চলুন ফিরে যাই, চলুন ফিরে যাই । এই নির্জন বনের মধ্যে এই অপূৰ্ব্ব গম্ভীর প্রাকৃতিক দৃশ্বের মধ্যে বসে সেই সৌন্দৰ্য্য-স্রষ্টার উদ্দেশে প্রার্থনা নিবেদন করি । এই স্থানে বনের পরিবেশের মধ্যে বসে র্তার কথাই আগে মনে পড়ে। ওপরে নীল আকাশ, চারিদিকে বনশ্রেণীর নির্জনতা—সত্যিই হরি রায়ের কথা, আমাদের গ্রামের বহু হতভাগ্যের কথা এখানে না মনে হয়ে পারে ? এবার এই ক’দিনের মধ্যে কত জায়গায় বেড়ালুম । বহরাগড়ার সেই মুক্ত space, কেশরদা গ্রামের সেই উড়িয়া পাড়ার বাড়ী, ধলভূমগড়ের মুক্ত সবুজ ধানের ক্ষেত্র ও শালবন, রাখা মাইনস্এর মিলিটারি ক্যাম্পে চাদ ওঠা রাত্রে বোসের সঙ্গে গল্প করচি। সকালে এলুম কালিকাপুর, সেখান থেকে চাইবাসা, আবার কল্যকার মত শেবরাজের জ্যোৎস্নালোকে চাইবাসা থেকে ৪২ মাইল দুৰন্ত হেলাডি বাংলোতে মোটরে আগমন পোড়াহাট অরণ্যের মধ্যে দিয়ে—তারপর আজ এই হিড়নি জলপ্রপাতের স্নান সকালবেলা ! চলার গান সার্থক হোক জীবনে। চরৈবেতি ।