পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৪৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢ई अङ्ग6j कधां क७ BX) স্টেটের সীমানা দেখতে । পথে গভীর অরণ্যের মধ্যে কোইন নদী (যার সঙ্গে আমার একবার পরিচয় হয়েচে কুম্ডি বাংলোর পাশে) কুলুকুলু তানে বয়ে চলেচে, হঠাৎ আমার নজর পড়লে প্রস্তরবছল একটি চমৎকার জায়গা কোইনা নদীর মধ্যে । আমার অভিজ্ঞতা থেকে জানি, বনের মধ্যে যেখানেই এসব দেশে নদী বয়ে যায়, সেখানে গতিপথে নানা স্বন্দর দৃশ্বের স্বষ্টি করেই অগ্রসর হয় নদী, পদে পদে রমণীয় শোভা বিতরণ করতে করতে চলে। পাথরের বড় বড় চাই, গাছপালা, বিহঙ্গ-কাকলী, স্বস্নিগ্ধ তরুচ্ছায়া, মৰ্ম্মর জল-কলতান—যাকে বলে বিউটি স্পট ( beauty spot ) তার আর বাকী রইল কি ? কিন্তু এ জায়গার বিশেষত্ব এই, এখানে নদীর মধ্যে যে চড়াস্থষ্টি হয়েচে, যেখানে বালি, বড় জোর পাথরের চুড়ি কি দু-দশখান। পাথরের চাই থাকা উচিত ছিল, সেখানে বহুদূর পর্য্যস্ত স্থান মাকড়া পাথর ( Labrite) দিয়ে যেন বাধানো। কত হাজার বছর ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে কোইনা নদী এমনি বয়ে চলে মাটি ক্ষইয়ে তুলে ফেলে তলাকার পাথর বার করে ফেলেচে, সে পাথরেরও নানাস্থানে মৌচাকের মত অসংখ্য গর্ত স্বষ্টি করেচে। তার প্রায় ৫০/৬০ হাত চওড়া, ১৫০ হাত লম্বা এক সমতল পাষাণের চত্বর-মত নদীর খাতের মধ্যে, কে যেন পাথর দিয়ে বঁধিয়ে রেখেচে । ঘন বন এর উভয় পাশে, থলকোবাদ নিজেই বনের মধ্যে—সেখান থেকে ছ' মাইল এসেচি মোটরে ঘনতর অরণ্যের মধ্য দিয়ে—তারপর এই স্বন্দর ছায়াভরা, পাষাণময় জলকলতানমুখর, জনহীন স্থানটি। আরও কিছুদূরে একটি বন্তগ্রাম, নাম করমপদ, তার ওধারে মুয়াগাও ও বনগাও বলে আরও দুটি গ্রাম । গ্রাম বলতে যা বোঝায় তা এসব নয়, বনবিভাগ থেকে এদের বিনাখাজনায় চাষের জমি দেওয়া হয়। ফসল করে তুলতে পারে না বন্তহস্তী ও সম্বর হরিণের উপদ্রবে। বনগাও গ্রামের দৃশ্বটি ছবির মত । গাড়ী থেকে নেমে আমরা একটা ছোট্ট টিলার ওপরে বসলুম শালগাছের ছায়ায়, আমাদের সামনে ক্ষুদ্র কোইন নদী সরু নালার মত বয়ে চলেচে, কারণ এই নদীর উৎপত্তি স্থান অদূরবর্তী বোনাই সীমাস্তেব শৈলমালা, এখান থেকে মাইল খানেক মাত্র দূর । নদীর ওপারে ঢেউখেলানো জমি পাহাড়ের মত উঠে গিয়েচে, তার গায়ে হরিৎবর্ণ ফুলে ভরা সরগুজা ক্ষেত, সবুজ কুরথীর ক্ষেত, দশটা খড় ও মাটির কুটির, গরু-মহিষ চরচে মাঠে, মেয়েরা কাজ করচে ক্ষেতে, ওদের সকলের পেছনে কেউনঝর রাজ্যের ঘনবনাবৃত শৈলমালা। স্থানটি গভীর অরণ্যের মধ্যে এবং চারিদিকে দূরে দূরে পাহাড় । আরও এগিয়ে গেলুম বোনাই রাজ্য ও সারেও বনের সীমান্তে। একটা উচু পাহাড়ের গায়ে পাঁচশ ফুট জায়গা ফাক, সব গাছ কেটে সীমা চিহ্নিত করা হয়েচে । তারপর আমরা নেমে গেলুৰ—ভাবলুম, বোনাই স্টেট, একবার বেড়িয়ে আসা যাক না। রাস্ত ক্রমশঃ নীচের দিকে নেমে গিয়েচে ঘনবনের মধ্য দিয়ে—কোনোই পার্থক্য নেই সারেও অরণ্যের সঙ্গে । মোট মোট লতা বড় বড় প্রাচীন বনম্পতিশ্রেণীকে পরস্পর সংযুক্ত করেচে, ফাক রাখেনি কোথাও, কালকার সেই হলুদ ফুল পথের ধার আলো করে ফুটে আছে, নিস্তৰত তেমনি গভীর, যেমন কিছু পূৰ্ব্বে পারেণ্ডাতে দেখেচি। নেমে যেতে আমাদের সামনে পড়লো একটা সংকীর্ণ উপত্যকা, ছুদিকে পাহাড়শ্রেণী দ্বারা