পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী গ্রামের মাম গালসিংড়ি-কয়েক ঘর গোয়ালার ব্রাহ্মণ এ গ্রামে বেশ সমৃদ্ধিসম্পদ গৃহস্থ, ধান পুকুর জমিজমা যথেষ্ট তাহাজের। অন্ত কোন ভাল ব্রাহ্মণ গ্রামে নাই, কায়স্থ আছে । এামে জঙ্গল খুব, বড় বড় আম-কাঠালের বাগান। ক্ষেত্রবাবুর পৈতৃক বাড়ী কোঠ, বড় সামনে পুকুর, সেখানে কৰ্ত্তাদের আমলে বড় বড় মাছ জাল দিয়া ধরা হইত, আজ কিছু নাই। শ্বশুর-বাড়ী বাস করিতেছে। - সকালে উঠিয়া ক্ষেত্রবাবু গ্রামের প্রজাদের ডাকাইলেন। সকলে আসিয়া প্ৰণাম করিল এবং এতদিন পরে তিনি গ্রামে আসিয়াছেন ইহাতে যথেষ্ট আনন্দ প্রকাশ করিল। —বাপপিতামহের ভিটা ছাড়িয়া বাহিরে না গেলে কি অন্ন হয় মা ? বাৰু এখানে থাকুন, তাহারা ধানের জমি করিয়া দিবে, চলিবার সব ব্যবস্থা করিয়া দিবে। ক্ষেত্রবাবুও ভাবিলেন, সাহেবের করিয়া প্রতি দিন খাত কারেক্ট করিবার হাঙ্গামা নাই, মিঃ আলমের ধূৰ্ত্ত চক্ষুর চাহনিতে আর ভয় খাইতে হইবে না—এই তো কত চমৎকার! মাকে মুখে গুজিয়া স্কুলে দৌড়িবার। নিভাননী হাসিয়া বলিল, দুধ এখানকার কী চমৎকার গো ! ইটিলিতে এমন ছুখ কিন্তু দেয় না গোয়াল । ক্ষেত্রবাবু বলেন, কোথেকে সেখানকার গোয়ালার ভাল দুধ দেবে ? তা দিতে পারে কখনও ? দিনকতক ভাল দুধের পায়েস পিঠে খাওয়া হইল। বাড়ীতে সত্যনারায়ণের পিন্ধি দেওয়া হইল একদিন। ইতিমধ্যে জুমি-কঁঠাল পাকিয়া উঠিল, ছেলে-মেয়ের প্রাণ পুরিয়া আম धांहेज । - - গ্রামের দক্ষিণে জোলের মাঠ, অনেক খেজুর পাকিয়াছে গাছে গাছে, ক্ষেত্রবাবু ছেলেমেয়েদের হাত ধরিয়া মাঠে গিয়া খেজুর কুড়াইয়া বাল্যের আনন্দ আবার উপভোগ করেন— , কুল বেল খাইয়া একদিন মাহুৰ হইয়া উঠিয়াছিলেন, যখন এ গ্রামের মাটি ছিল পৃথিবীর জীবদের একমাত্র নোঙর,ক্ষুত্রের মধ্যেও সে পরিধি ছিল অসীম—লে সব দিনের কথা মনে হয়। তারপর তিনি বি-এ পাস করিলেন, এখানে জায় ধাৰণ চলিল না, বিদেশে চাকুরি লইতে হইল। কর্তারাও সব পরলোকে চলিয়া গেলেন—গ্রামের সঙ্গে সংযোগ-স্বত্র ছিন্ন হইল। লক্ষ্যায়শিয়ালের ডাকে পিতৃপুরুষের ভিটা মুখরিত হইতে লাগিল। মধ্যে বার-দুই এখানে